‘অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস’-এ ত্রুটির ফলে বিভ্রাটের কবলে শতাধিক অ্যাপ ও ওয়েবসাইট, কারণ কী?
অ্যামাজনের ক্লাউড সেবা ইউনিট অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস (এডব্লিউএস ) গতকাল (২০ অক্টোবর) কয়েক ঘণ্টার জন্য বড় বিভ্রাটের মুখে পড়ায়, ১,০০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠান ও কোটি কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রভাবিত হয়েছেন। এতে স্ন্যাপচ্যাট, রেডিট, লয়েডস ব্যাংক, হ্যালিফ্যাক্স ব্যাংক, রোব্লক্স ও ফোর্টনাইটের মতো জনপ্রিয় অ্যাপ ও পরিষেবা বন্ধ ছিল। খবর বিবিসি'র।
এডব্লিউএস যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় ক্লাউড সার্ভিস কোম্পানি। এটি স্টোরেজ, ডেটাবেস ও কম্পিউটিং সেবা দেয়। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজস্ব ব্যয়বহুল সার্ভার রাখতে হয় না।
গতকাল একটি সাধারণ ডোমেইন নেম সিস্টেম (ডিএনএস) ত্রুটি প্রতিষ্ঠানটির জন্য বড় সংকট তৈরি করেছে। যখন কেউ অ্যাপ বা ওয়েবসাইট খুলে, তখন তার ডিভাইস সেই সার্ভিসের সাথে সংযোগ চায়। ডিএনএস ঠিকভাবে কাজ করলে ট্রাফিক ঠিক জায়গায় যায়। গতকাল এডব্লিউএস ঠিকমতো ডিএনএস পরিচালনা করতে পারেনি।
ডিএনএস ত্রুটি সাধারণত সার্ভার ব্যর্থতা, রক্ষণাবেক্ষণ বা মানুষের ভুলের কারণে হয়। কখনও কখনও এটি সাইবার আক্রমণের কারণে হতে পারে, তবে এ ঘটনায় এমন কোনো প্রমাণ নেই।
কেন এত বড় প্রভাব পড়লো?
এ ধরনের ত্রুটি অনেক কারণে ঘটতে পারে।
এডব্লিউএস জানিয়েছে, সমস্যা হয়েছে তাদের নর্দান ভার্জিনিয়ার বড় ডেটা সেন্টারে, যা কোম্পানির সবচেয়ে পুরনো ও বড় কেন্দ্র।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা দেখিয়েছে, একক সেবাদাতার ওপর সম্পূর্ণ নির্ভর করা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। এডব্লিউএস বড় প্রতিষ্ঠান এবং কোটি কোটি ব্যবসা এর ওপর নির্ভরশীল।
তবে সমস্যা হলো, এডব্লিউএস-এর বিকল্প খুব কম। মূলত এর দুটি বিকল্প আছে—মাইক্রোসফটের আজুর এবং গুগলের ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম।
ছোট প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে রয়েছে আইবিএম এবং চীনের আলিবাবা। সুপারমার্কেট লিডলের মাতৃপ্রতিষ্ঠান গত বছর ইউরোপে 'স্ট্যাকইট' নামে একটি প্রতিদ্বন্দ্বী চালু করেছে, যা সরাসরি এডাব্লিউএস-এর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে। তবু এডাব্লিউএস এখনও এই খাতে অনেকতাই এগিয়ে আছে।
কেউ মনে করেন, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপকে দ্রুত নিজেদের অবকাঠামো তৈরি করতে হবে এবং মার্কিন ক্লাউড সেবার ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। অন্যেরা বলেন, এখন হয়তো অনেক দেরি হয়ে গেছে।
ব্রিটিশ সরকারের একজন কর্মকর্তা একবার বলেছিলেন, 'কোনো এমপি আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যে এডাব্লিউএস-এর সমতুল্য তৈরি করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।' কিন্তু উত্তরে বলা হয়েছিল, 'কী লাভ? ওখানেই তো এডাব্লিউএস আছে।'
গতকালকের বড় বিভ্রাটের ঘটনা হয়তো দেখাচ্ছে, বিষয়টি তত সহজ নয়।
