নিজের পুরোনো পোর্ট্রেট নিয়ে অসন্তুষ্ট ট্রাম্প, তবে পুতিনের কাছ থেকে পেলেন নতুন উপহার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি নতুন পোর্ট্রেট উপহার দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পাশাপাশি, কলোরাডো স্টেট ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে বারাক ওবামার পাশে প্রদর্শিত নিজের পুরোনো পোর্ট্রেটকে 'খারাপ' বলেও উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। তার অভিযোগ ছবিটি তার বাস্তব চেহারার সাথে মিলছে না, বরং 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে' বিকৃত করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল-এ পুরোনো পোর্ট্রেট নিয়ে তার অসন্তোষ প্রকাশ করার পর সোমবার এটি কলোরাডো স্টেট ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের দেয়াল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
তবে পুতিনের দেয়া নতুন পোর্ট্রেটটি এখনও জনসমক্ষে দেখানো হয়নি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কভ জানিয়েছেন এটি একটি 'ব্যক্তিগত উপহার', এবং পুতিন ছাড়া আর কেউ এর বিস্তারিত জানাতে পারবেন না।
ট্রাম্পের প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ এই নতুন পোর্ট্রেটটি মস্কো থেকে ওয়াশিংটনে নিয়ে আসার কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি চিত্রটিকে 'সুন্দর পোর্ট্রেট' হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তবে এর সম্পর্কে আর কোনো মন্তব্য করেননি। উইটকফ বলেন, ট্রাম্প এটি পেয়ে 'স্পষ্টত আবেগে আপ্লুত' হয়েছেন।
উইটকফ, যিনি সম্প্রতি পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন, জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট তাকে বলেছিলেন যে, তিনি ট্রাম্পের ওপর এক বছর আগে হওয়া হামলার পর তার জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। পেনসিলভেনিয়ায় একটি র্যালিতে হওয়া সে হামলায় ট্রাম্পের একটি আইকনিক ছবি ধারণ করা হয়েছিল, যেখানে তিনি রক্তাক্ত কানে আঙুল তুলে সমর্থকদের 'যুদ্ধ করো, যুদ্ধ করো, যুদ্ধ করো' বলতে থাকেন।
পুতিনের কাছ থেকে উপহার পাওয়া পোর্ট্রেট সম্পর্কে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি ট্রাম্প, তবে তিনি তার পুরোনো পোর্ট্রেট নিয়ে বলেন, এটি এমনভাবে আঁকা হয়েছে, যেন তাকে 'পুরোপুরি বিকৃত' মনে হয়েছে। একই শিল্পী বারাক ওবামার চিত্রও তৈরি করেছিলেন, এবং ট্রাম্প সে পোর্ট্রেটের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ওবামার চিত্রটি 'চমৎকার' ছিল।
ওই পোর্ট্রেটটি একটি ক্রাউডফান্ডিং ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে তৈরি হয়েছিল, এবং মূলত একটি খালি জায়গা পূরণ করার জন্য আনা হয়েছিল, যেখানে আগে পুতিনের একটি ছবি ছিল।
কলোরাডো হাউস ডেমোক্রেটদের মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, তারা চিত্রটি সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং এটি এখন নিরাপদ স্থানে রাখা হবে।
কলোরাডো টাইমস রেকর্ডারের সঙ্গে ২০১৯ সালে কাজ করেছেন শিল্পী সারাহ বোর্ডম্যান। বিবিসিকে তিনি বলেন, 'প্রত্যেক প্রেসিডেন্টের জন্যই একপক্ষ থেকে ক্ষোভ থাকবে, এটা মানব প্রকৃতি।' তিনি আরও বলেন, 'এই ধরনের চিত্র সাধারণত বিতর্কিত হয়, কারণ তা বিভিন্ন মানুষের কাছে ভিন্নভাবে গ্রহণ করা হয়।'
অন্য একজন পোর্ট্রেট শিল্পী বিবিসিকে জানিয়েছিলেন, তিনি ছবিটি 'অন্যভাবে' আঁকতেন, তবে প্রেসিডেন্টের পোর্ট্রেট আঁকানো সাধারণত একটি জটিল কাজ, এবং শিল্পীর প্রতি তিনি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন।
প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের অফিসিয়াল পোর্ট্রেটের শিল্পী রবার্ট অ্যান্ডারসন বলেন, 'দর্শকরা চিত্রটির প্রতি তাদের অনুভূতির ওপর ভিত্তি করে ছবির গুণগত মান বিচার করে, যা প্রায়ই ছবির প্রকৃত মানের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।' তিনি আরও বলেন, 'ট্রাম্পের পোর্ট্রেট আঁকানো খুবই কঠিন, কারণ তার নিজের প্রতি একটি বিশেষ ধারণা রয়েছে, যা হয়তো অন্যদের ধারণার থেকে অনেক ভিন্ন—বিশেষত দেশের অর্ধেক জনগণের কাছ থেকে।'
এদিকে, কলোরাডো গভর্নর জ্যারেড পোলিসের এক মুখপাত্র নাইন নিউজকে বলেছেন, 'মার্কিন প্রেসিডেন্ট আমাদের কলোরাডো স্টেট ক্যাপিটল এবং এর শিল্পকর্ম নিয়ে আগ্রহী, এটা জেনে গভর্নর অবাক হয়েছেন'। মুখপাত্র আরও বলেন, 'আমরা প্রেসিডেন্ট এবং সবাইকে ধন্যবাদ জানাই আমাদের ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের প্রতি আগ্রহের জন্য, এবং আমরা সবসময় আমাদের দর্শনার্থীদের অভিজ্ঞতা উন্নত করার সুযোগ খুঁজছি।'