Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

মাউন্ট এভারেস্টে পথে পথে মৃতদেহ, তবু কেন পর্বতারোহীরা এই দুঃসাহসী অভিযানে পাড়ি জমায়?

২০২৩ সালকে এভারেস্টের সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। এবছর পাঁচজন নিখোঁজসহ মোট ১৮ জন পর্বতারোহী প্রাণ হারিয়েছেন।
মাউন্ট এভারেস্টে পথে পথে মৃতদেহ, তবু কেন পর্বতারোহীরা এই দুঃসাহসী অভিযানে পাড়ি জমায়?

আন্তর্জাতিক

সিএনএন
02 May, 2024, 11:35 am
Last modified: 02 May, 2024, 09:41 pm

Related News

  • গঙ্গা চুক্তি পুনঃআলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণে বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে ভারত
  • সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৪ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করলো বিএসএফ
  • ভারত জানিয়ে দিল, পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানিচুক্তিতে আর কখনোই ফিরবে না
  • আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনে ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা ষড়যন্ত্র করছে: রিজভী
  • ভারতে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় বাংলাদেশি তরুণের মরদেহ উদ্ধার

মাউন্ট এভারেস্টে পথে পথে মৃতদেহ, তবু কেন পর্বতারোহীরা এই দুঃসাহসী অভিযানে পাড়ি জমায়?

২০২৩ সালকে এভারেস্টের সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। এবছর পাঁচজন নিখোঁজসহ মোট ১৮ জন পর্বতারোহী প্রাণ হারিয়েছেন।
সিএনএন
02 May, 2024, 11:35 am
Last modified: 02 May, 2024, 09:41 pm

ঘন ঘোলাটে মেঘে আকাশ ছেয়ে গেছে, হিমশীতল বাতাস প্রতি ঘণ্টায় ১০০ মাইল বেগে তুষার বয়ে আনছে এবং মাইনাস ৩০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় ঘন ঘন প্রাণঘাতী তুষারঝড় ও তুষারপাত হচ্ছে। এসবই পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের সাধারণ পরিস্থিতি।

হিমালয়ের নেপাল ও তিব্বতের মধ্যে ২৯,০৩২ ফুট (৮,৮৪৯ মিটার) উঁচু এই চূড়া, আকাশের পেঁজা তুলোর মতো মেঘ ভেদ করে সগর্বে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে।

এভারেস্টে আরোহণের জন্য কয়েক মাস বা কখনো কখনো কয়েক বছরের প্রশিক্ষণ ও কন্ডিশনিংয়ের প্রয়োজন হয়।এরপরেও পর্বতারোহী যে শিখরে পৌঁছাতে পারবেন, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

এপর্যন্ত পর্বতারোহণের চেষ্টাকালে তিনশ'- এরও বেশি মানুষ মারা গেছেন বলে জানা যায়।

তবুও এখনও এই চূড়া শত শত পর্বতারোহীকে আকর্ষণ করে। তারা প্রতি বসন্তে এর চূড়ায় ওঠার অদম্য ইচ্ছা নিয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে অভিযান শুরু করেন।

আজ আমরা জানব কীভাবে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গে আরোহণ করা হয় এবং কিছু পর্বতারোহী কেন বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।

'আমার ধারণা ছিল শারীরিকভাবে আমি যথেষ্ট ফিট ছিলাম'

ট্রমা সার্জন ড. জ্যাকব উইজেল প্রায় এক বছর কন্ডিশনিং করার পর গতবছরের মে মাসে এভারেস্ট জয় করেন।

উইজেল সিএনএনকে বলেন, 'আমি ৫০ পাউন্ডের ব্যাকপ্যাক নিয়ে কোনো সমস্যা ছাড়াই দুই ঘণ্টা ধরে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে পারতাম। তাই আমার ধারণা ছিল, আমি এই অভিযানের জন্য অনেক বেশি ফিট।'

এই সার্জন জানান, তবে পরবর্তীতে তিনি বুঝতে পারেন, তার যে শারীরিক ফিটনেস, তা এভারেস্টে আরোহণের জন্য যথেষ্ট নয়। এই যাত্রা ছিল ভয়াবহ প্রতিকূল।

এভারেস্টে ওঠার সময় অক্সিজেনের অভাবে তার কঠিন কষ্টের কথা স্মরণ করে উইজেল বলেন, 'আমি পাঁচ পা হাঁটতাম, এরপরই দম নেওয়ার জন্য ৩০ সেকেন্ড থেকে এক মিনিট সময় নিতে হতো আমার।'

পর্বতারোহীরা সাধারণত পর্বতে পৌঁছানোর পরে তাদের ফুসফুসকে অক্সিজেনের স্বল্পতার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে একটি অভিযোজন পদ্ধতি অনুশীলন করেন।

এজন্য পর্বতারোহীরা প্রথমে এভারেস্টের চারটি ক্যাম্পের যেকোনো একটিতে আরোহণ করেন। এরপর সেখানে এক থেকে চার দিন অবস্থান করার পর ফের নিচে ফিরে যান।

এভারেস্ট বেজ ক্যাম্প। ছবি: পূর্ণিমা শ্রেষ্ঠ/এএফপি/গেটি ইমেজ

কমপক্ষে দু'বার এই কাজটি করা হয়, যাতে অভিযাত্রীদের শরীর অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাসের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। এতে পর্বতারোহীর বেঁচে থাকা এবং চূড়ায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

উইজেল বলেন, 'আপনি যদি কাউকে হঠাৎ এভারেস্টে নিয়ে যান, এর চূড়ায় না শুধু এর হাই ক্যাম্প পর্যন্তও নেন, তাহলেও সম্ভবত ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে তিনি কোমায় চলে যাবেন।'

তিনি বলেন, 'আর মোটামুটি এক ঘণ্টার মধ্যে তিনি মারা যাবেন। কারণ তার শরীর এত কম অক্সিজেনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবে না।'

এভারেস্টে আরোহণের আগে, উইজেল সফলভাবে কয়েক ডজন পর্বত জয় করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে: কিলিমাঞ্জারো (১৯,৩৪১ ফুট), চিম্বোরাজো (২০, ৫৪৯ ফুট), কোটোপাক্সি (১৯,৩৪৭ ফুট) এবং অতি সম্প্রতি জানুয়ারিতে অ্যাকোনকাগুয়া (২২,৮৩৭ ফুট)।

তিনি বলেন, এগুলোর কোনোটিকেই মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতার সঙ্গে তুলনা করা যায় না।

তিনি আরও বলেন, 'কারণ আপনি যতই ভালোভাবে প্রশিক্ষিত হোন না কেন, একবার আপনার দেহের সর্বোচ্চ সহ্যক্ষমতা ব্যবহার করে ফেললে, সেখান থেকে ফেরা কঠিন।'

এভারেস্টের সর্বোচ্চ চূড়ার মানুষের বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব এবং বেশিরভাগ পর্বতারোহী ২৩ হাজার  ফুটের উপরে উঠার পর থেকেই, বহন করে নিয়ে যাওয়া সম্পূরক অক্সিজেন ব্যবহার করেন। 

অক্সিজেনের অভাব পর্বতারোহীদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। তারা এভারেস্টের 'ডেড জোন'-এ পৌঁছানোর পরে অক্সিজেনের মাত্রা ৪০% এরও নিচে নেমে যায়।

'ওখানে বেঁচে থাকা কঠিন'

পর্বতারোহীদের প্রথম লক্ষ্য প্রায় ১৭ হাজার ফুট উচ্চতায় এভারেস্ট বেস ক্যাম্প, সেখানে পৌঁছাতে পর্বতারোহীদের প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগে। এরপর তারা পর্বতের বাকি তিনটি ক্যাম্পে আরোহণ করেন।

চূড়ায় ওঠার আগে শেষ ক্যাম্প হলো ক্যাম্প- ফোর। ২৬ হাজার ফুট উচ্চতায় ডেথ জোনের প্রান্ত বরাবর এর অবস্থান। এখানে অক্সিজেনের মাত্রা খুব কম, তাপমাত্রা শূন্যের নিচে এবং প্রচণ্ড বাতাসের মুখোমুখি হেতে হয় পর্বতারোহীদের।এত জোরে বাতাস বইতে পারে, যা একজন মানুষকে পর্বত থেকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট শক্তিশালী।

উইজেল সিএনএনকে বলেন, 'সেখানে বেঁচে থাকা কঠিন।'

তিনি পথে পর্বতারোহীদের মৃতদেহ পার হয়ে এগিয়ে যাওয়ার স্মৃতিচারণ করেন – এভারেস্টে এটি খুব স্বাভাবিক একটি দৃশ্য।

মৃত পর্বতারোহীদের দেহগুলো যুগ যুগ ধরে শুভ্র বরফের মাঝে সংরক্ষিত থাকে, তীব্র শীতল তাপমাত্রার কারণে সেগুলোর খুব সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এই সার্জন বলেন, 'আমি সম্ভবত অধিকাংশ মানুষের চেয়ে মৃত্যু ও প্রাণহানির সঙ্গে বেশি পরিচিত। তাই এগুলো (পর্বতারোহীদের মৃতদেহ) আমার কাছে পরিস্থিতির গুরুতরতা এবং জীবন কতটা ভঙ্গুর তার একটি জলজ্যান্ত প্রমাণ বলে মনে হয়েছিল। পাশাপাশি বেঁচে থাকার সুযোগ পাওয়ায় আমার মনে কৃতজ্ঞতা বোধ এবং এই মৃতরা যা করতে পারেনি (এভারেস্টের চূড়ায় ওঠা) তা করার জন্য আরও বেশি অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।'

পর্বতারোহীরা উপরে ওঠার সময় আরেকটি সমস্যায় খুব বেশি পড়েন, তা হলো হাই অ্যাল্টিটিউড সেরিব্রাল এডিমা বা এইচএসিই।

উইজেল বলেন, 'এতে আপনার মস্তিষ্ক অক্সিজেনের জন্য ক্ষুধার্ত হয়ে উঠবে।'

এইচএসিই- এর ফলে আপনার মস্তিষ্ক প্রচণ্ড অস্থির হয়ে স্থিতিশীল অক্সিজেন খুঁজতে থাকবে, এসময়ই পর্বতারোহীদের মস্তিষ্ক ফুলে যায়। যার ফলে তন্দ্রা, কথা বলতে এবং চিন্তা করতে সমস্যা হয়। এছাড়াও চোখে ঝাপসা দেখা এবং বিভ্রান্তিও হতে পারে।

উইজেল বলেন, 'আমার শ্রুতি হ্যালুসিনেশন হয়েছিল। সেখানে আমি আমার বন্ধুদের কণ্ঠস্বর শুনছিলাম, মনে হচ্ছিল আমার পেছন থেকে তাদের কথা ভেসে আসছে।'

তিনি বলেন, 'এছাড়াও আমার ভিজ্যুয়াল হ্যালুসিনেশনও হয়েছিল। আমি পাথর থেকে আমার স্ত্রী ও সন্তানের মুখ বেরিয়ে আসতে দেখেছিলাম।'

উইজেল তার বন্ধু ওরিয়েন আইমার্ডের কথা স্মরণ করেন। তার ওই বন্ধু আহত হয়ে পর্বতে আটকা পড়েছিলেন।

তিনি বলেন, "আমার মনে আছে আমি পাঁচ মিনিটের মতো তার দিকে তাকিয়েছিলাম এবং শেষে শুধু বলেছিলাম, 'আমি খুব দুঃখিত'।"

উইজেল সিএনএনকে বলেন, 'আমি আমার জীবনের এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সার্জন হিসেবে মানুষকে সহায়তা করার জন্য প্রশিক্ষণ নিয়েছি। অথচ এমন একটি অবস্থানে ছিলাম, যেখানে একজন মানুষের আপনার সাহায্যের প্রয়োজন, কিন্তু আপনি কোনো সহায়তা করতে পারছেন না... এই অসহায়ত্ব মেনে নেওয়া ছিল খুব কঠিন।'

তার বন্ধু আইমার্ড অবশ্য বেঁচে যান। তাকে উদ্ধার করা হয়েছিল। তার পায়ের বেশ কয়েকটি হাড় ভেঙে গিয়েছিল এবং হাত তুষারপাতের ফলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এত কিছুর পরেও আইমার্ডকে অত্যন্ত ভাগ্যবানদের একজন হিসেবে মনে করা হয়।

'তাদের লাশ পাহাড়েই জমে যাবে'

যুগ যুগ ধরে পর্বতারোহণের সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, এভারেস্ট তার শুভ্র বরফের আচ্ছাদনে তাদের মৃতদেহ আগলে রেখেছেন।

ছবি: এপি

২০১৪ সালে এভারেস্ট জয় করা পর্বতারোহী কোচ অ্যালান আর্নেটের মতে, যখন কোনো প্রিয়জন বা সহকর্মী পর্বতারোহী গুরুতরভাবে আহত হন বা পর্বতে মারা যান, তখন আপনি যদি তাদের বাঁচাতে না পারেন, তাহলে তাদের লাশ পিছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা।

তিনি বলেন, 'বেশিরভাগ দল মৃত পর্বতারোহীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে যা করে তা হলো, তারা লাশটিকে দৃষ্টিসীমার বাইরে নিয়ে যান।' সেসময় তাদের সর্বোচ্চ এটুকুই করার সাধ্য থাকে।

আর্নেট সিএনএনকে বলেন, 'তবে খারাপ আবহাওয়া অথবা মৃতদেহগুলো জমে পর্বতের বরফের সঙ্গে লেগে যাওয়ায়, কখনো কখনো এটুকু করাও সম্ভব হয় না।'

এভারেস্টে মৃতদেহ দেখা ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনা দেখার সঙ্গে তুলনা করা যায় বলে মনে করেন তিনি।

আর্নেট বলেন,'দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু দেখে আপনি তো আর বাড়ি ফিরে যান না। মৃতের সম্মানে আপনি সেখানে কিছুক্ষণ থামেন, মৃতের জন্য দোয়া করেন, তারপর আবার আপনি চলতে শুরু করেন।'

বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গে তুষারধসে ১২ জন শেরপা গাইডের মৃত্যুর প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার পর ১০ বছর পেরিয়ে গেছে।

তবে ২০২৩ সালকে এভারেস্টের সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। এবছর পাঁচজন নিখোঁজসহ মোট ১৮ জন পর্বতারোহী প্রাণ হারিয়েছেন।

এসব মৃতদেহ উদ্ধারের প্রক্রিয়াও খুব কষ্টসাধ্য, এমনকি কখনো কখনো তা অসম্ভব। অতি উচ্চতা এবং ঘন ঘন আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে হেলিকপ্টারের সাহায্যে উদ্ধার ও অনুসন্ধান অভিযান চালানোটাও খুব চ্যালেঞ্জিং। অনেক সময় অন্যদের বাঁচানোর চেষ্টা করতে গিয়েও কিছু উদ্ধারকারী মারা গেছেন।

'২৯ হাজার ফুট উপর থেকে সূর্যোদয় দেখা'

ক্যাম্প- ফোর থেকে চূড়ায় উঠতে তিন হাজার ফুট উপরে উঠতে হয়। এই পথ পাড়ি দিতে ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। তাই পর্বতারোহীরা সাধারণত রাতেই ক্যাম্প ত্যাগ করেন।

উইজেল স্মরণ করেন, সেই পুরো রাতটি ছিল খুব ঠান্ডা, অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং ঝড়ো হাওয়া বইছিল। তবে সকালে আমাদের অভিযান সার্থক হয়েছিল।

উইজেল সিএনএনকে বলেন, '২৯ হাজার ফুট উঁচু থেকে সূর্যোদয় দেখা এবং নীচের উপত্যকায় এভারেস্টের ছায়ার সেই পিরামিডটি দেখার অভিজ্ঞতা ছিল অনন্য।' 

তিনি আরও বলেন, 'এটি সম্ভবত আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্যগুলোর মধ্যে একটি। যখন মনে হলো আমি পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচুতে দাঁড়িয়ে আছি, বাকি সবকিছু আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি তার নিচে রয়েছে, তখন মনে অদ্ভুত শিহরন অনুভব করছিলাম।'

এই সার্জন বলেন, এই পর্বতের বিশালত্ব আপনার মনে ক্ষদ্রতাবোধ জাগিয়ে তুলবে। 'আমার নিজেকে এর আগে কখনো এত ক্ষুদ্র মনে হয়নি।'

তিনি বলেন, 'নিজের চেয়ে বড় কিছুর সামনে দাঁড়ালে মানুষের মনে কৃতজ্ঞতা ও অসীমের সামনে ক্ষুদ্রতার বোধ সঞ্চার করে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা এভারেস্ট। সেখান থেকে প্রকৃতির তুলনায় আমাদের অস্তিত্ব কতটুকু, আমরা তা অনুভব করতে পারি।'

উইজেলের মতো, আর্নেটও সূর্যোদয়ের সময় চূড়ায় উঠেছিলেন এবং তার মনেও 'ক্ষুদ্রতা'-এর একই অনুভূতি এসেছিল।

আর্নেট বলেন, ওই চূড়ায় দাঁড়িয়ে আমি এতগুলো পর্বত দেখেছিলাম যে 'আপনারা গুনে শেষ করতে পারবেন না'।

তিনি বলেন, 'আমার মন কৃতজ্ঞতায় পূর্ণ হয়ে উঠেছিল এবং একইসঙ্গে আমার মনে হচ্ছিল যে আমাকে আবার সেই নিত্যনৈমিত্তিক জীবনে ফিরে যেতে হবে।'

সাধারণত পর্বতারোহীরা চূড়ায় ওঠার প্রায় ২০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পরে পর্বতের পাদদেশের উদ্দেশে নামতে শুরু করেন।

ছবি: লাকপা শেরপা/এএফপি/গেটি ইমেজেস

'উদ্দেশ্য ব্যক্তিগত স্বার্থের চেয়েও অনেক বিশাল'

নেপালে যাওয়ার আগে উইজেলকে তার নেটিভ আমেরিকান ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবে একটি ঈগলের পালক উপহার দেওয়া হয়।

তিনি এভারেস্টের চূড়ায় পালকটি গেঁথে দেওয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছিলেন।

উইজেল সিএনএনকে বলেন, 'আমার মনে আছে ঈগলের পালকটি পৃথিবীর শীর্ষে গেঁথে দিতে পেরে এবং আমার দেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়ে আমার সত্যিই নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছিল।'

তিনি জানান, তিনি শুধু একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য এভারেস্ট জয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তা হলো নেটিভ আমেরিকান বা আমেরিকার আদি বাসিন্দাদের পক্ষে চাইলে সবকিছু করা সম্ভব।

উইজেল বলেন, 'ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে নিজের জীবন এবং অন্যদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলার একমাত্র সত্যিকারের যুক্তি হলো, আপনার এমন কোনো কারণে কাজটি করা উচিত, যে স্বার্থ আপনার নিজের জীবনের চেয়েও অনেক বড়।'

অন্যদিকে, সফলভাবে আরোহণের আগে আর্নেট তিনবার এভারেস্টে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন।

আর্নেট বলেন, 'প্রথম তিনবার চেষ্টা করার সময় আমার কাছে পরিষ্কার ছিল না, কেন আমি এই অভিযান করছি। কিন্তু আমার মা আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর, আমি এই অভিযানের নতুন উদ্দেশ্য খুঁজে পাই।'

তিনি বলেন,'আমি আলঝেইমার রোগীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে এবং আমার মায়ের উদ্দেশ্যে সম্মান জানাতে এটি করতে চেয়েছিলাম।'

আর্নেট জানান, এ বছর প্রায় ৩০০ জনকে এভারেস্টে ওঠার অনুমতি দিয়েছে নেপাল সরকার। আগের বছরগুলোর তুলনায় এ সংখ্যা কম।

তিনি বলেন, 'আমি মনে করি এর অন্যতম কারণ হচ্ছে গত বছর ১৮ জন পর্বতারোহীর মৃত্যু। সবাই হয়ত এরপর বুঝতে পেরেছে, মাউন্ট এভারেস্ট একটি বিপজ্জনক পর্বত।'

তবে তিনি মনে করেন, কোনো কিছুই পর্বতারোহীদের এভারেস্ট চূড়ায় ওঠা থেকে বিরত রাখতে পারবে।

আর্নেট সিএনএনকে বলেন, 'আমি প্রচণ্ড বিশ্বাস করি, আপনারা যখন এসব পর্বত আরোহণ করতে যাবেন, তখনকার চেয়ে নিজেদের আরও অনেক ভাল সংস্করণ হয়ে অভিযান শেষে বাড়ি ফিরে আসবেন।'

তিনি আরও বলেন, 'মানুষ বলে এভারেস্টের অতিরিক্ত বাণিজ্যিকীকরণ হয়ে গেছে, আপনারা মৃতদেহের উপর দিয়ে হাঁটছেন এবং এটি আবর্জনায় ভরা। বাস্তবতা হলো এগুলোর পরিমাণ খুব কম। তারচেয়ে মানুষ এই আরোহণে অনেক বেশি আনন্দ উপভোগ করেন। আর এ কারণেই মানুষ এখনও পর্বতারোহণ করে।'

 


ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি

Related Topics

টপ নিউজ

মাউন্ট এভারেস্ট / ভারত / নেপাল / হিমালয় / পর্বতারোহী

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • কর্মচারীদের জন্য সর্বনিম্ন বিশেষ ভাতা ১,৫০০ টাকা ও পেনশনের জন্য ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করল সরকার
  • মার্কিন হামলায় ‘একরকম নিশ্চিত’ হয়ে গেল এক দশকের মধ্যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হবে: বিশ্লেষক
  • হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিল ইরান
  • গঙ্গা চুক্তি পুনঃআলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণে বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে ভারত
  • ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা: ইউরেনিয়াম স্থানান্তরের বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় ইসরায়েল
  • বাজেটে সম্পত্তি হস্তান্তরে কর হার কমাল সরকার

Related News

  • গঙ্গা চুক্তি পুনঃআলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণে বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে ভারত
  • সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৪ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করলো বিএসএফ
  • ভারত জানিয়ে দিল, পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানিচুক্তিতে আর কখনোই ফিরবে না
  • আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনে ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা ষড়যন্ত্র করছে: রিজভী
  • ভারতে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় বাংলাদেশি তরুণের মরদেহ উদ্ধার

Most Read

1
অর্থনীতি

কর্মচারীদের জন্য সর্বনিম্ন বিশেষ ভাতা ১,৫০০ টাকা ও পেনশনের জন্য ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করল সরকার

2
আন্তর্জাতিক

মার্কিন হামলায় ‘একরকম নিশ্চিত’ হয়ে গেল এক দশকের মধ্যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হবে: বিশ্লেষক

3
আন্তর্জাতিক

হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিল ইরান

4
বাংলাদেশ

গঙ্গা চুক্তি পুনঃআলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণে বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে ভারত

5
আন্তর্জাতিক

ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা: ইউরেনিয়াম স্থানান্তরের বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় ইসরায়েল

6
অর্থনীতি

বাজেটে সম্পত্তি হস্তান্তরে কর হার কমাল সরকার

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab