Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী, এখন তারা রোহিঙ্গাদের সাহায্যই চায়

সম্প্রতি রাখাইনে আরাকান আর্মি নামক একটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে বিশাল এলাকা হারানোর পর হাজারো রোহিঙ্গাকে নির্বিচারে হত্যা করা মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এখন জোর করে রোহিঙ্গাদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দিচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী, এখন তারা রোহিঙ্গাদের সাহায্যই চায়

আন্তর্জাতিক

বিবিসি
11 April, 2024, 03:35 pm
Last modified: 11 April, 2024, 03:39 pm

Related News

  • রাখাইনে মানবিক সহায়তা প্রদান নিয়ে যেসব প্রশ্নের উত্তর দিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়
  • করিডর নিয়ে 'কোনো আলোচনা হয়নি', ত্রাণ 'চ্যানেল' দেওয়ার প্রস্তাব বিবেচনায়: খলিলুর রহমান
  • রাখাইন করিডোর ইস্যুতে দুপুর ২টায় সংবাদ সম্মেলন করবেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান
  • আমরা কূটনীতিতে বিশ্বাসী, পুশ-ইন করি না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • সীমান্ত বাংলাদেশকে ম্যানেজ করতে হবে: আরাকান আর্মির প্রসঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা

রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী, এখন তারা রোহিঙ্গাদের সাহায্যই চায়

সম্প্রতি রাখাইনে আরাকান আর্মি নামক একটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে বিশাল এলাকা হারানোর পর হাজারো রোহিঙ্গাকে নির্বিচারে হত্যা করা মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এখন জোর করে রোহিঙ্গাদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দিচ্ছে।
বিবিসি
11 April, 2024, 03:35 pm
Last modified: 11 April, 2024, 03:39 pm

হাজারো রোহিঙ্গাকে নির্বিচারে হত্যা করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বাধ্য করেছে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে। জাতিসংঘ একে আখ্যায়িত করেছে 'জাতিগত নিধন'-এর উদাহরণ হিসেবে। মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর সাত বছর পর এখন সেই রোহিঙ্গাদেরই সাহায্য চাইছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী

রাখাইন স্টেটে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে বিবিসি। সংবাদ সংস্থাটি জানতে পেরেছে, গত কয়েক সপ্তাহে অন্তত ১০০ জন রোহিঙ্গাকে যুদ্ধরত জান্তার পক্ষে লড়াইয়ের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে এ প্রতিবেদনে সাক্ষাৎকার দেওয়া রোহিঙ্গাদের নাম পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। 

৩১ বছর বয়সি রোহিঙ্গা মোহাম্মদ তিন সন্তানের পিতা। রাখাইন স্টেটের রাজধানী সিত্তোওয়ের বাউ দু ফা শিবিরে থাকেন। গত এক দশক ধরে অন্তত ১ লাখ ৫০ হাজার অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা আইডিপি শিবিরগুলোতে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। 

সম্প্রতি মিয়ানমারের সেনাদলে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছেন মোহাম্মদ। তিনি বিবিসিকে বলেন, 'আমি ভীত ছিলাম, কিন্তু তারপরও আমাকে যোগ দিতে হয়েছিল।'

গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি একদিন গভীর রাতে মোহাম্মদের কাছে আসেন তার শিবিরের নেতা। এসে তিনি বলেন, মোহাম্মদকে সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

সেই রাতের স্মৃতিচারণ করে মোহাম্মদ বলেন, তাকে বলা হয়েছিল, 'এটা সেনাবাহিনীর আদেশ। আদেশ পালন না করলে তোমার পরিবারের ক্ষতি করার হুমকি দিয়েছে ওরা।'

বিবিসির সঙ্গে কথা বলা কয়েকজন রোহিঙ্গা নিশ্চিত করেছেন, সেনা কর্মকর্তারা শিবিরে শিবিরে গিয়ে তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য হাজির হতে আদেশ দিচ্ছেন। 

মোহাম্মদের মতো পুরুষদের জন্য চরম পরিহাসের বিষয় হচ্ছে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা এখনও নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত এবং নানারকম বৈষম্যমূলক বিধিনিষেধের শিকার। উদাহরণস্বরূপ, তারা নিজ কমিউনিটির এলাকার বাইরে যাওয়া-আসা করতে পারেন না।

অনেক রোহিঙ্গা গত এক দশক ধরে শিবিরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত

২০১২ সালে রাখাইন স্টেটের মিশ্র কমিউনিটি থেকে বিতাড়িত করা হয় লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে। বিতাড়িত ওই রোহিঙ্গাদের শিবিরে বসবাস করতে বাধ্য করা হয়। এর পাঁচ বছর পর, ২০১৭ সালের আগস্টে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংস নিধন অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী।

ওই নিধনযজ্ঞ চালানোর পর ৭ লাখ রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। হত্যা ও ধর্ষণের শিকার হয় হাজার হাজার রোহিঙ্গা; তাদের গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়। রাখাইনে এখনও প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা রয়ে গেছে।

রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে মিয়ানমার এখন নেদারল্যান্ডসের হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বিচারের মুখোমুখি।

সম্প্রতি রাখাইনে আরাকান আর্মি নামক একটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে বিশাল এলাকা হারানোর পর সেই একই সেনাবাহিনী এখন জোর করে রোহিঙ্গাদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দিচ্ছে। রাখাইনে সেনাবাহিনীর কামান ও বিমান হামলায় কয়েক ডজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।

দেশের অন্যান্য অংশে বিরোধী বাহিনীগুলোর হামলার মুখে জান্তা বড় ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।  শনিবার পূর্বাঞ্চলীয় থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী শহর মায়াওয়াদ্দির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে সেনাবাহিনী। থাইল্যান্ডের সঙ্গে মিয়ানমারের স্থল বাণিজ্যের বেশিরভাগই হয়ে থাকে গুরুত্বপূর্ণ এ শহরের মাধ্যমে।

বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষে জান্তা বিপুলসংখ্যক সৈন্য হারিয়েছে। এই সেনারা নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন, আত্মসমর্পণ করেছেন অথবা দলত্যাগ করে বিরোধীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এই ক্ষতি ও ঘাটতি পূরণ করা জান্তার জন্য কঠিন।

মিয়ানমারে এখন খুব কম লোকই দেশটির অজনপ্রিয় জান্তা সরকারের জন্য নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিতে আগ্রহী।

আর রোহিঙ্গাদের আশঙ্কা, এ কারণেই তাদের আবার টার্গেট করা হচ্ছে। যে যুদ্ধে জান্তা হেরে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, সেই যুদ্ধে কামানের খোরাক বানানো হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। 

মোহাম্মদ জানান, তাকে সিত্তোওয়ের ২৭০তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ২০১২ সালের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সময় বিতাড়িত হওয়ার পর থেকে শহরটিতে রোহিঙ্গাদের বসবাস নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

মোহাম্মদ বলেন, 'কীভাবে গুলি ভরতে হয়, গুলি চালাতে হয়—এসব শেখানো হয়েছে আমাদের।'

২০১৮ সালে রোহিঙ্গাদের একসময়ের নিবাস এই গ্রামটি পুড়িয়ে দেয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। ছবি: রয়টার্স

সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলকভাবে যোগ দেওয়া আরেকদল রোহিঙ্গার একটি ভিডিও দেখেছে বিবিসি। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, রোহিঙ্গাদের বিএ ৬৩ রাইফেল চালানো শেখানো হচ্ছে। পুরনো স্ট্যান্ডার্ডের এই অস্ত্র মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ব্যবহার করে। 

দুই সপ্তাহ প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর মোহাম্মদকে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়। তবে এর মাত্র দুদিন পরে তাকে আবার ডেকে নেওয়া হয়। ২৫০ জন সৈন্যের সঙ্গে  নৌকায় তুলে পাঁচ ঘণ্টা উজান পাড়ি দিয়ে রথেদাংয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে পাহাড়চূড়ার তিনটি সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণের জন্য আরাকান আর্মির সঙ্গে জান্তার তীব্র লড়াই চলছিল।

মোহাম্মদ বলেন, 'আমি কেন যুদ্ধ করছি, সে ব্যাপারে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। তারা যখন আমাকে একটি রাখাইন গ্রামে গুলি করতে বলে আমি স্রেফ গুলি করি।'

তিনি সেখানে ১১ দিন যুদ্ধ করেছিলেন। তাদের রসদ রাখার কুঁড়েঘরের ওপর গোলা পড়ার পরে তারা খাবার সংকটে পড়ে যান। 

বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে গোলার আঘাতে নিহত হতে দেখেছেন মোহাম্মদ।

যুদ্ধে মোহাম্মদের দুই পায়েও শ্রাপনেলের (গোলার ভেতরে পোরা গোলার টুকরো বা বুলেট, গোলা বিস্ফোরিত হলে বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে) আঘাত লাগে। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য সিত্তোওয়েতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

গত ২০ মার্চ আরাকান আর্মি তিনটি ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর যুদ্ধের ছবি প্রকাশ করে। ওই ছবিতে বেশ কয়েকটি মৃতদেহ দেখানো হয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত তিনজনকে রোহিঙ্গা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

মোহাম্মদ বলেন, 'যুদ্ধের ময়দানে থাকাকালে আমি পুরো সময় আতঙ্কিত ছিলাম। সারাক্ষণ আমার পরিবারের কথা ভাবতাম। আমি কখনও ভাবিনি যে আমাকে এভাবে যুদ্ধে যেতে হবে। আমি শুধু বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলাম। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিলাম। মনে হচ্ছিল নতুন করে মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নিচ্ছি।'

মিয়ানমারের সেনাদলে যোগ দিতে বাধ্য হওয়া আরেকজন রোহিঙ্গা হোসেন। তিনি থাকেন সিত্তোওয়ের কাছে আরেক শিবির ওহন তাও গি-তে। তার ভাই মাহমুদ বলেন, হোসেনকে ফেব্রুয়ারিতে নিয়ে গিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু হোসেনকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর আগেই তিনি আত্মগোপনে চলে যান।

আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করার অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে সামরিক বাহিনী। জান্তার মুখপাত্র জেনারেল জাও মিন তুন বিবিসিকে বলেন, রোহিঙ্গাদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি বলেন, 'আমরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। সেজন্য তাদের প্রতিরক্ষার কাজেই সাহায্য করতে বলেছি।'

তবে বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সিত্তোওয়ে লাগোয়া পাঁচটি ভিন্ন আইডিপি শিবিরে থাকা সাতজন রোহিঙ্গা একই কথা বলেছেন: তারা অন্তত ১০০ জন রোহিঙ্গার কথা জানেন যাদের এ বছর সেনাদলে নিয়োগ দিয়ে যুদ্ধে পাঠানো হয়েছে।

তারা বলেছেন, সৈন্য ও স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাদের দল ফেব্রুয়ারিতে শিবিরে এসে ঘোষণা দিয়েছিলেন, অল্পবয়সি পুরুষদের নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রথমে তারা জানিয়েছিলেন, সেনাবাহিনীতে যোগ দিলে রোহিঙ্গারা খাবার, মজুরি ও নাগরিকত্ব পাবে। এসবই ছিল বড় প্রলোভন। 

আরাকান আর্মির সাথে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কারণে আন্তর্জাতিক সাহায্য আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আইডিপি শিবিরগুলোতে খাদ্য দুষ্প্রাপ্য ও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। 

তবে জোর করে নিয়োগ দেওয়া পুরুষদের নিয়ে যেতে ফিরে আসার সময় সৈন্যরা নাগরিকত্বের প্রস্তাব ফিরিয়ে নেয়। তখন শিবিরের বাসিন্দারা প্রশ্ন করেছিলেন, মিয়ানমারের নাগরিক হয়েও তাদের কেন সেনাদলে যোগ দিতে হবে? জবাবে তাদের বলা হয়েছিল, তারা যেখানে বাস করেন, সেই জায়গাটি রক্ষা করার দায়িত্বও তাদের। রোহিঙ্গাদের বলা হয়, তারা সৈন্য নয়, মিলিশিয়া হবেন। রোহিঙ্গারা নাগরিকত্বের প্রস্তাব সম্পর্কে প্রশ্ন করলে উত্তর আসে, 'তোমরা ভুল বুঝেছ'।

ক্যাম্প কমিটির একজন সদস্য জানান, সেনাবাহিনী এখন সম্ভাব্য নিয়োগপ্রাপ্তদের নতুন তালিকা চাইছে। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে আসা প্রথম দলের কাছ থেকে তাদের দেখে এবং তাদের অভিজ্ঞতা শোনার পর আর কেউ সেনাদলে যোগ দেওয়ার ঝুঁকি নিতে রাজি নয় বলে জানান তিনি।

তাই শিবিরের নেতারা এখন টার্গেট করেছেন সবচেয়ে দরিদ্র ও বেকার পুরুষদের। সেনাবাহিনীতে যোগ দিলে তাদের পরিবারকে সহায়তা করার প্রস্তাব দিয়ে এই পুরুষদের রাজি করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

মানবাধিকার গোষ্ঠী ফোর্টিফাই রাইটস-এর ম্যাথিউ স্মিথ বলেন, 'এই নিয়োগ কার্যক্রমটি বেআইনি এবং জোরপূর্বক শ্রমের মতোই।

'সামরিক বাহিনী দেশব্যাপী গণতান্ত্রিক বিপ্লব প্রতিরোধ করার চেষ্টায় গণহত্যার শিকার রোহিঙ্গাদেরই সেনাদলে যোগ দিতে বাধ্য করছে। এই শাসকদের কাছে মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই।'

ক্রমেই শক্তিশালী হওয়া আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে রাখাইন বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ফের সাম্প্রদায়িক সংঘাত বাধানোর ঝুঁকি তৈরি করছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। রাখাইনের সিংহভাগ বৌদ্ধই বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছে।

দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে ২০১২ সালে সিত্তোওয়ের মতো শহরগুলো থেকে কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে বিতাড়িত করা হয়েছিল। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর হামলায় রাখাইনরাও যোগ দিয়েছিল।

এরপর থেকে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা কমে আসে।

হাজারো রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে মিয়ানমারের জান্তা; বিতাড়িত করেছে লাখো রোহিঙ্গাকে। ছবি: সংগৃহীত

আরাকান আর্মি একটি স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের জন্য লড়াই করছে। সামরিক জান্তাকে উৎখাত করতে এবং মিয়ানমারে একটি নতুন ফেডারেল সরকার ব্যবস্থা গঠন করতে অন্যান্য জাতিসত্তার সেনাবাহিনী ও বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে মিলে লড়াই করছে আরাকান আর্মি।

রাখাইন রাজ্যে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আরাকান আর্মি সম্প্রতি রাজ্যটিতে বসবাসকারী সবাইকে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলেছে। তাদের এ কথায় ইঙ্গিত রয়েছে যে, তারা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবর্তন মেনে নিতে পারে।

পরিস্থিতি এখন বদলে গেছে। আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুখা বিবিসিকে বলেন, জান্তার পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য রোহিঙ্গাদের জোর করে সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত করার বিষয়টিকে তারা 'সম্প্রতি গণহত্যার শিকার এবং স্বৈরাচার থেকে মুক্তির জন্য লড়াইরতদের সঙ্গে সবচেয়ে জঘন্য বিশ্বাসঘাতকতা' হিসেবে দেখেন।

বুথিদাউংয়ে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভও সামরিকপন্থি সংবাদমাধ্যমগুলোতেই প্রচার করা হচ্ছে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা বিবিসিকে বলেছেন যে তাদের ধারণা, পক্ষ দুটির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টায় সেনাবাহিনীই এসব বিক্ষোভের আয়োজন করেছে।

রোহিঙ্গারা এখন এমন একটি সেনাবাহিনীর জন্য লড়াই করতে বাধ্য হচ্ছে যারা মিয়ানমারে তাদের বসবাসের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয় না। এর ফলে শিগগিরই রাখাইনের বেশিরভাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এমন একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে রোহিঙ্গাদের দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। একসময় রোহিঙ্গারা অপর দুই গোষ্ঠীর টার্গেটে পরিণত হলেও এখন তারা দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের মাঝখানে আটকা পড়েছে।

সেনাবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধ করার স্বীকৃতিস্বরূপ মোহাম্মদকে একটি সনদ দিয়েছে জান্তা। এ সনদের মূল্য কী, বা এ সনদের সুবাদে তিনি ভবিষ্যতে সামরিক চাকরি থেকে রেহাই পাবেন কি না, তা জানেন না মোহাম্মদ। আর আরাকান আর্মি যদি সিত্তোওয়ে এবং তার শিবিরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে, তাহলে এই সনদ উল্টো তাকে সমস্যায় ফেলতে পারে।

মোহাম্মদের জখম এখনও পুরোপুরি সারেনি। যুদ্ধের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পর এখন তিনি রাতে ঘুমাতে পারেন না। 

'আমি আতঙ্কে আছি, ওরা আমাকে আবার ডাকতে পারে। ভাগ্য ভালো ছিল বলে এবার ফিরে আসতে পেরেছি, কিন্তু পরেরবার কী হবে জানি না।'


  • অনুবাদ: মারুফ হোসেন

Related Topics

টপ নিউজ

রোহিঙ্গা / মিয়ানমার / মিয়ানমারের জান্তা সরকার / রাখাইন / রাখাইন রাজ্য / আরাকান আর্মি

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ প্রণোদনা, পাবেন জুলাই থেকে
  • সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর ঘোষণা অর্থ উপদেষ্টার
  • যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে, যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে
  • নোবেল পুরস্কারসহ ৯ ধরনের পুরস্কারের আয়ে দিতে হবে না কর
  • ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় ৪০০ ইলেকট্রিক বাস যুক্ত করার ঘোষণা
  • এখন থেকে বছরে একবারের বেশি ব্যাগেজ রুলসের সুবিধায় স্বর্ণ আনা যাবে না

Related News

  • রাখাইনে মানবিক সহায়তা প্রদান নিয়ে যেসব প্রশ্নের উত্তর দিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়
  • করিডর নিয়ে 'কোনো আলোচনা হয়নি', ত্রাণ 'চ্যানেল' দেওয়ার প্রস্তাব বিবেচনায়: খলিলুর রহমান
  • রাখাইন করিডোর ইস্যুতে দুপুর ২টায় সংবাদ সম্মেলন করবেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান
  • আমরা কূটনীতিতে বিশ্বাসী, পুশ-ইন করি না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • সীমান্ত বাংলাদেশকে ম্যানেজ করতে হবে: আরাকান আর্মির প্রসঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা

Most Read

1
অর্থনীতি

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ প্রণোদনা, পাবেন জুলাই থেকে

2
অর্থনীতি

সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর ঘোষণা অর্থ উপদেষ্টার

3
অর্থনীতি

যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে, যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে

4
বাংলাদেশ

নোবেল পুরস্কারসহ ৯ ধরনের পুরস্কারের আয়ে দিতে হবে না কর

5
বাংলাদেশ

ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় ৪০০ ইলেকট্রিক বাস যুক্ত করার ঘোষণা

6
অর্থনীতি

এখন থেকে বছরে একবারের বেশি ব্যাগেজ রুলসের সুবিধায় স্বর্ণ আনা যাবে না

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab