চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ব্যানার অপসারণ নিয়ে যুবদলের দু'পক্ষের গোলাগুলি; নিহত ১, আহত ৮
চট্টগ্রামের বাকলিয়া এলাকায় বিএনপি'র অঙ্গসংগঠন যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. সাজ্জাদ (২২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক নেতা এমদাদুল হক বাদশা ও স্থানীয় নেতা বোরহানের নেতৃত্বাধীন দুই পক্ষের মধ্যে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ বাঁধে।
সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে বাকলিয়ার সৈয়দ শাহ রোডের মদিনা আবাসিক এলাকার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বোরহানের অনুসারীরা ডা. শাহাদাত হোসেনের ছবিসংবলিত একটি ব্যানার টানান। পরে বাদশার সমর্থকেরা 'উর্ধ্বতন নেতাদের নির্দেশে' সেটি নামাতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়, যা মুহূর্তেই গোলাগুলিতে রূপ নেয়।
নিহত সাজ্জাদ বাকলিয়ার তক্তারপুল এলাকার বাসিন্দা মো. আলমের ছেলে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, সাজ্জাদ ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী এবং ডা. শাহাদাত হোসেনের অনুসারী ছিলেন। সম্প্রতি তিনি পাথরঘাটা এলাকার একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন।
নিহতের বড় ভাই মো. ইমরান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে বলেন, 'আমার ভাই বাড়িতে ছিল। বিএনপি কর্মী মোবারক ফোন করে তাকে বাইরে ডাকলে সে যায়। কিছুক্ষণ পরই গুলির শব্দ শুনতে পাই। পরে জানতে পারি, সাজ্জাদকে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। রাত ২টার দিকে জানানো হয়, সে মারা গেছে।'
পুলিশ জানায়, সাজ্জাদের বুকে গুলি লাগে এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চমেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশিক বলেন, 'গুলিবিদ্ধ এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আরও আটজন গুলিবিদ্ধ বা আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।' আহতদের মধ্যে রয়েছেন— জুয়েল, সাব্বির, শরীফ, ইয়াসিন, একরাম, পারভেজ ও মারুফ। তারা সবাই বাকলিয়ার বউবাজার এলাকার বাসিন্দা।
বাকলিয়া থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, 'ব্যানার টানানোকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে। একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি।'
সংঘর্ষের পর বাকলিয়া এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে যাতে আর কোনো সহিংসতা না ঘটে।
স্থানীয়দের ভাষ্যে, এমদাদুল হক বাদশা আগে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। চাঁদাবাজি ও দখলবাজির অভিযোগে গত জুলাইয়ে তিনি দল থেকে বহিষ্কৃত হন। এরপর থেকেই তার অনুসারীদের সঙ্গে ডা. শাহাদাতপন্থী গ্রুপগুলোর দ্বন্দ্ব চলছে।
