ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি, প্রস্তাবে মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের মতানৈক্য

ভোজ্যতেলের দাম পুনঃনির্ধারণ নিয়ে ব্যবসায়ী ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দেশের ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন—বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বৈঠকে ব্যবসায়ীরা প্রতি লিটার সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি লিটারের দাম এক টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।
তবে ব্যবসায়ীরা মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছেন না। তাদের দাবি, বিষয়টি আরও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বৈঠকের পরে মেঘনা গ্রুপের উপ-মহাব্যবস্থাপক তসলিম শাহরিয়ার টিবিএসকে বলেন, 'ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব ছিল। কিন্তু সোমবারের বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রতি মাসেই এই ধরনের বৈঠক হয়। আশা করি আন্তর্জাতিক বাজারের দাম পর্যালোচনা করে সরকার আগামী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেবে।'
টিকে গ্রুপের পরিচালক (ফাইন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) শফিউল আতাহার তসলিম বলেন, 'কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়েছে। মন্ত্রণালয়কে সব তথ্য-উপাত্ত দেওয়া হয়েছে। আশা করছি তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।'
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে টিবিএসকে বলেন, 'ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। দাম সমন্বয়ের জন্য আরও পর্যালোচনা প্রয়োজন।'
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'মূল্য নির্ধারণ হয়নি। সময় লাগবে।'
সূত্র জানিয়েছে, কয়েকদিন আগে ব্যবসায়ীরা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম প্রতি লিটার ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাদের যুক্তি, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে এবং বর্তমানে দেশে যে দামে তেল বিক্রি হচ্ছে, তাতে তারা লোকসানে পড়ছেন। বর্তমানে বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৯ টাকায় এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৭৪ টাকায়।
গত এপ্রিলে এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। পাম তেল বর্তমানে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত আগস্টে সরকার নির্ধারণ করেছে।
সূত্র আরও জানায়, ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবিত দাম বৃদ্ধির পরিমাণ মন্ত্রণালয়ের মতে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
সভায় মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, টিকে গ্রুপের পরিচালক মোস্তফা হায়দার, সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী, সেনা এডিল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিনিধি কর্নেল কে এম হাসানুল হক, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, ট্যারিফ অ্যান্ড ট্রেড কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান এবং টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফয়সল আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।