কার্নিশে ঝুলে থাকা ছাত্রকে গুলির মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ বৃহস্পতিবার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর রামপুরায় একটি ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা এক ছাত্রকে গুলি ও একই এলাকায় অন্য দুজনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী বৃহস্পতিবার অভিযোগ গঠনের জন্য আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আগামী বৃহস্পতিবার অভিযোগ গঠনের জন্য দিন ধার্য করে এই আদেশ দেন।
মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে অভিযোগ গঠন চেয়ে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। পলাতক আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
আর গ্রেপ্তার আসামি সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন তার আইনজীবী সারওয়ার জাহান নিপ্পন।
এই মামলায় পলাতক সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বাদে বাকি চার আসামি হলেন- ডিএমপির খিলগাঁও জোনের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান ও রামপুরা থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) তরিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।
গ্রেপ্তার আসামি হলেন রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) চঞ্চল চন্দ্র সরকার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই জুমার নামাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে আমির হোসেন ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পড়ে যান। এসময় পুলিশ গুলি চালানো শুরু করলে তিনি একটি নির্মাণাধীন ভবনের চারতলায় উঠে আশ্রয় নেন।
একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে পুলিশ ভবনটির চারতলায় উঠে যায়। সেখানে পুলিশ আমির হোসেনকে পেয়ে তার দিকে বন্দুক তাক করে এবং বারবার নিচে লাফ দিতে বলে। এক পুলিশ সদস্য তাকে ভয় দেখাতে কয়েকটি গুলিও চালান।
এক পর্যায়ে ভয়ে আমির হোসেন লাফ দিয়ে নির্মাণাধীন ভবনটির রড ধরে ঝুলে থাকেন। এরপর তৃতীয় তলা থেকে একজন পুলিশ সদস্য আমির হোসেনকে লক্ষ্য করে ছয়টি গুলি করেন, যা তার দুই পায়ে লাগে।
পুলিশ চলে যাওয়ার পর তিনি ঝাঁপ দিয়ে কোনোরকমে তৃতীয় তলায় পড়েন। তখন তার দুই পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। প্রায় তিন ঘণ্টা পর একজন শিক্ষার্থী ও দুইজন চিকিৎসক তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান এবং পরবর্তীতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান।
এছাড়া রামপুরায় ওই একই দিন ঘটনাস্থলের সামনে আরও দুজনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ আনা হয় এই মামলায়।