গেরিলা প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি আ. লীগ নেতার

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গেরিলা প্রশিক্ষণ দেওয়ার ঘটনায় রাজধানীর ভাটারা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফ হাসান অনু আদালতে দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুই দিনের রিমান্ড শেষে তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির গুলশান বিভাগের ইন্সপেক্টর জেহাদ হোসেন শরিফ হাসান অনুকে আদালতে হাজির করেন। এসময় আসামি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ডের আবেদন জানান তদন্ত কর্মকর্তা।
আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথি জবানবন্দি রেকর্ড করেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ভাটারা থানার আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক জাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে দেওয়া আবেদনে উল্লেখ করা হয়, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে শরিফ হাসান অনু 'অপারেশন ঢাকা ব্লকড'-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রিয়াংকা রানওয়ে সিটি উত্তরা, মিরপুর ডিওএইচএস, বসুন্ধরা কেবিন কনভেনশন হল ও রূপগঞ্জের সি-সেল রিসোর্টে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত এসটিএম ও সিটিএম সদস্যদের নিয়ে গোপনে কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এই জবানবন্দি প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তদন্ত কর্মকর্তা। একইসঙ্গে জামিন পেলে আসামি পলাতক হওয়ার আশঙ্কা থাকায় তার জামিনের বিরোধিতা করেন তিনি।
গত ১০ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকার একটি এলাকা থেকে শরিফ হাসান অনুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরা সংলগ্ন কে বি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীসহ ৩০০–৪০০ জন অংশ নেন। সেখানে তারা সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়া মাত্র সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীরা ঢাকায় সমবেত হবেন। এরপর শাহবাগ মোড় দখল করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে শেখ হাসিনার দেশে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার পরিকল্পনা করা হয়।
ওই ঘটনায় ১৩ জুলাই ভাটারা থানার উপপরিদর্শক জ্যোতির্ময় মন্ডল সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি দায়ের করেন।