সাবেক ডিবি প্রধান হারুনকে ‘জ্বীন’ বলে ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: মামুন

ডিবির তৎকালীন প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে 'জ্বীন' বলে ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন জবানবন্দিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, হারুন সরকারের যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পারদর্শী ছিলেন। আন্দোলন দমন ও সমন্বয়কদের আটক–আন্দোলন থেকে সরে আসতে চাপ প্রয়োগসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে হারুন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ০১- এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে জবানবন্দিতে এ কথা জানান আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া এ সাবেক আইজিপি।
জবানবন্দিতে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আন্দোলন শুরু হলে সারা দেশে সেনা মোতায়েন করা হয়। এরপর ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতি রাতেই ধানমন্ডিতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় কোর কমিটির বৈঠক হতো।
সাবেক আইজিপির দাবি, এসব বৈঠকে আন্দোলন দমন ও সরকারের পক্ষে নানা নির্দেশনা দেওয়া হতো। বৈঠকে তিনি ছাড়াও উপস্থিত থাকতেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাংগীর আলম, অতিরিক্ত সচিব টিপু সুলতান ও রেজা মোস্তফা, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ, র্যাব মহাপরিচালক হারুন অর রশিদ, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, এনটিএমসির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের প্রধানেরা।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, এক বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ডিজিএফআই এ প্রস্তাব দেয়। তিনি এর বিরোধিতা করলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে রাজি হন। আটকের দায়িত্ব দেওয়া হয় ডিবি প্রধান হারুনকে।
পরে ডিজিএফআই ও ডিবি সমন্বয়কদের আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসে। সেখানে তাঁদের আন্দোলন প্রত্যাহার ও সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে চাপ দেওয়া হয়। এমনকি তাঁদের আত্মীয়স্বজনকেও ডিবিতে এনে চাপ প্রয়োগ করা হয়।
তিনি জানান, শেষ পর্যন্ত সমন্বয়কদের টেলিভিশনে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে বাধ্য করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় হারুনের ভূমিকা ছিল মূল।