যথাযথ প্রক্রিয়ায় পুশ ইন করা হচ্ছে, দাবি বিএসএফ মহাপরিচালকের

বাংলাদেশে পুশ ব্যাক প্রক্রিয়া যথাযথ নিয়ম মেনেই সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মহাপরিচালক শ্রী দালজিৎ সিং চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরের শহীদ ক্যাপ্টেন আশরাফ হলে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, 'শুধুমাত্র যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী তাদেরই বিরুদ্ধে নিয়ম মেনে পুশ ইন করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৫৫০ জনকে বিজিবির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত ২ হাজার ৪০০ কেস যাচাই প্রক্রিয়া চলছে, বাংলাদেশ হাই কমিশন সহযোগিতা করছে।'
এ সময় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ দুই বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএসএফ মহাপরিচালক আরও বলেন, 'সীমান্ত আইন লঙ্ঘনজনিত অপরাধের ক্ষেত্রে আমাদের দুই দেশের মধ্যে প্রত্যাবর্তনের (ডিপোর্টেশন) ওয়েল স্টাবলিশড বৈধ চ্যানেল রয়েছে, যার মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। যদি কেউ ইন্ডিয়ান নাগরিক হয়ে থাকেন, তাহলে তাকে তাৎক্ষণিক গ্রহণ করা হবে।'
সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধে কী ধরনের সিদ্ধান্ত হয়েছে জানতে চাইলে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, 'এটা নিয়ে এবার সীমান্ত সম্মেলনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়েছে। সীমান্তে মারনঘাতি অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় রাতের বেলায় টহল জোরদার করে সীমান্ত হত্যার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।'
উভয় বাহিনী যৌথ সচেতনতামূলক কার্যক্রম, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি, সীমান্তের অলঙ্ঘনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং অপরাধীদের আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম প্রতিরোধের বিষয়ে একমত হয়।
তবে বিএসএফ সদস্যদের আত্মরক্ষার প্রয়োজনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, 'চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ৩৫ জন বিএসএফ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন অনুপ্রবেশকারীদের ধারালো অস্ত্রের হামলায়। সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ সদস্যরা প্রথমে সতর্ক করে, বাধা দেয়। এবং শেষ পদক্ষেপ হিসেবে গুলি ছোঁড়া হয়।'
এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বিজিবি মহাপরিচালক মন্তব্য করেন, 'সম্প্রতি একজন অল্প বয়সী বাংলাদেশী নাগরিককে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ। ওই শিশুটি বর্ডার নিরাপত্তার জন্য কতোটুকু ঝুঁকিপূর্ণ ছিল?'
চার দিনব্যাপী (২৫–২৮ আগস্ট) মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৬তম সীমান্ত সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে বৃহস্পতিবার।
গত মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিজিবি সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে বৈঠক শুরু হয়। এতে বাংলাদেশ পক্ষের নেতৃত্ব দেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
অপরদিকে, বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী দালজিৎ সিং চৌধুরী, আইপিএস-এর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশগ্রহণ করে।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় প্রতিনিধিদলের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।