পুরো আসনের ফল বাতিলের ক্ষমতা পেল ইসি, ফিরছে ‘না’ ভোট

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটে অনিয়ম হলে পুরো নির্বাচনি আসনের ভোট বাতিল করতে পারবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া ফিরিয়ে আনা হয়েছে 'না' ভোটের বিধান।
আজ সোমবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে কমিশনের সভা শেষে এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
তিনি বলেন, 'নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে নির্বাচন কমিশন চাইলে একটি-দুটি কিংবা পুরো আসনের ফল বাতিল করতে পারবে। এ ছাড়া ফল ঘোষণার সময় গণমাধ্যমকর্মীরা থাকতে পারবেন বলে জানান তিনি।
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, 'নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করা ২২টি নতুন রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।'
এসময় ইভিএম সংক্রান্ত সব বিধান বিলুপ্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'সব আসনে নয়, শুধু কোনো আসনে প্রার্থী একজন থাকলে তাকে 'না' ভোটের সঙ্গে লড়াই করতে হবে। 'না' ভোট বেশি হলে আবার নির্বাচন হবে।' বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা রোধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
২০০৮ সালে সব আসনে 'না ভোট' চালু থাকলেও নবম সংসদে তা বাদ দেওয়া হয়। এবার সংস্কার কমিশন 'না ভোট' ফের চালুর প্রস্তাব দিলেও ইসি সব আসনে তা না রেখে শুধু একক প্রার্থী হলে সেক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করেছে।
তিনি জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংস্কারের প্রস্তাব চূড়ান্ত হলে আগামী সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সরকারের অনুমোদন পেলে তা সংশোধন অধ্যাদেশ আকারে জারি হবে। ঐকমত্য কমিশনের কোনো সুপারিশ থাকলে পরে যুক্ত করা হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে আগে ভোট সমান হলে লটারির মাধ্যমে বিজয়ী নির্ধারণের বিধান ছিল। কমিশন তা বাদ দিয়ে পুনঃনির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দু'জন প্রার্থীর মধ্যে ফের ভোট হবে, লটারির মাধ্যমে নয়।
সানাউল্লাহ বলেন, 'নির্বাচন কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার শাস্তি স্পষ্ট করা হয়েছে। তদন্ত শেষে তিন কর্মদিবসের মধ্যে ব্যবস্থা নিয়ে তা ইসিকে জানাতে হবে।'
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো 'না ভোট' প্রয়োগ করেছিল ভোটাররা। ওই সময় জারি করা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ধারা ৩১(৫) (বিবি)-তে এ বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এ বিধান অনুযায়ী ব্যালট পেপারের সবশেষ প্রার্থীর স্থানে লেখা ছিল 'ওপরের কাউকে নয়' এবং ভোটারদের বোঝার সুবিধার্থে 'ক্রস' চিহ্ন ব্যবহার হতো।
ইসি আরও বলেন, 'নির্বাচনী প্রচারণায় শুধুমাত্র ডিজিটাল বিলবোর্ডে বিদ্যুতের ব্যবহার করা যাবে। আলোকসজ্জার ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। প্রার্থীদের ব্যয়ের অডিট আরও সুনির্দিষ্ট ও কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। তবে কেবল সেসব ক্ষেত্রেই অডিট হবে যেখানে কমিশন ব্যয়ের অনিয়মের আশঙ্কা দেখতে পাবে।'