'যারা পিআর চান না, তাদের জনপ্রিয়তা নেই—আছে মাস্তান ও চাঁদাবাজ': জামায়াত নেতা তাহের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, যারা নির্বাচন আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতিতে করতে চায় না, তাদের আসলে জনগণের সমর্থন নেই—তাদের ভরসা মাস্তান আর চাঁদাবাজ বাহিনী।
তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন পিআর পদ্ধতি ছাড়া কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হবে না এবং কোনও সংস্কার ছাড়া নির্বাচন জনগণ মানবে না।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগরী উত্তরের আয়োজনে মহাখালী রেলগেট এলাকায় অনুষ্ঠিত এক সমাবেশ ও গণমিছিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি দাবি করেন, "আওয়ামী লীগ ও একটি-দুটি দল ছাড়া দেশের প্রায় সবাই এখন জুলাই মুক্তিযোদ্ধা। আওয়ামী লীগ এতটাই বিচ্ছিন্ন যে তারা অনেক দূর চলে গেছে, দিল্লি পর্যন্ত। তারা আর ফিরে আসতে পারবে না।"
তাহের বলেন, "যারা নতুন স্বৈরাচার গঠনের চেষ্টা করবে, তাদের ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে জামায়াত কখনও আপস করে না। জামায়াত সবসময় টেকসই গণতন্ত্রের পক্ষে থাকবে।"
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, "দেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনও হয়নি। ১৯৭৩ সাল থেকে শেখ হাসিনার সর্বশেষ নির্বাচন পর্যন্ত সবগুলোতেই ভোট ডাকাতি, কেন্দ্র দখল, দিনের ভোট রাতে হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "নতুন পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে হবে। এতে কেন্দ্র দখল বা টাকার লেনদেনের সুযোগ থাকবে না। যারা পিয়ার চায় না, তাদের জনপ্রিয়তা নেই—তাদের আছে মাস্তান ও চাঁদাবাজ।"
সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তাহের বলেন, "আপনি জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিবেন না। এখন যদি তারিখ ঘোষণা করেন, তা হবে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।"
তিনি আরও বলেন, "আপনি রাজপথের আন্দোলনে ছিলেন না। আপনাকে বসিয়েছি আমরা—আমাদের রক্ত ও লাশের বিনিময়ে। যদি আপনি আরেকটি স্বৈরাচারকে সহায়তা করেন, তাহলে জনগণ আপনাকে আর নেবে না।"
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ব্যর্থতা উল্লেখ করে তাহের বলেন, "এই দেশের মানুষ বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে দেখেছে—তারা ব্যর্থ ও পালিয়ে গেছে। এবার জামায়াতকে একবার সুযোগ দিন। আমরা ৫৪ বছরের দুর্নীতির ইতিহাস মুছে ফেলব।"
নারী ও সংখ্যালঘুদের নিয়ে প্রচলিত সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, "জামায়াত ক্ষমতায় এলে নারীরা নিরাপত্তার সঙ্গে চাকরি ও ব্যবসা করতে পারবে। আর সংখ্যালঘুরা আমাদের অধীনে বেশি নিরাপদ ছিলেন। আমি কুমিল্লা থেকে এমপি ছিলাম, যদি কোনো হিন্দু আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, আমি জনসমক্ষে ক্ষমা চাইব।"
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, "জুলাই সনদের ভিত্তিতেই আগামী নির্বাচন হতে হবে। এবং প্রবাসীদের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।"
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "আপনারা চাঁদাবাজ বাহিনীদের গ্রেপ্তার করুন—যারা ভোট না দিলে পাথর ছুঁড়ে, প্রাণনাশ করে।"
তিনি আরও দাবি করেন, "জুলাই অভ্যুত্থানে জামায়াত ছিল অন্যতম স্টেকহোল্ডার। সেই কারণেই আমাদের নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে।"