এসএসসিতে পাশের হার ও জিপিএ-৫-এ এগিয়ে মেয়েরা

এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পাশের হার ও জিপিএ ফাইভে এগিয়ে আছেন মেয়েরা।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২ টায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সভা কক্ষে বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের পক্ষে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন।
ফলাফলে ৯টি সাধারণ ও মাদ্রাসা এবং কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাশের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এবারের এসএসসিতে জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন শিক্ষার্থী। গত বছর ১১টি বোর্ডে গড় পাশের হার ছিল ৮৩.০৪ শতাংশ। সেসময় জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন।
এ বছর ছাত্রদের মধ্যে পাশের হার ৬৫.৮৮ শতাংশ এবং ছাত্রীদের মধ্যে পাশের হার ৭১.০৩ শতাংশ। আর ছাত্রদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৪১৬ জন এবং ছাত্রীদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৭৩ হাজার ৬১৬ জন।
চলতি বছর মাদ্রাসা বোর্ডে পাশের হার ৬৮.০৯ শতাংশ। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাশের হার ৭৩.৬৩ শতাংশ।
এছাড়া ৯ টি সাধারণ বোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ৬৭.৫১ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে ৭৭.৬৩ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৬৩.৬০ শতাংশ, যশোর বোর্ডে ৭৩.৬৯ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭২.০৭ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৫৬.৩৮ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৬৮.৫৭ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে ৬৭.০৩ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বোর্ডে ৫৮.২২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাশ করেছেন।
সামগ্রিকভাবে পাসের হার কম হওয়ার কারন হিসেবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খোন্দকার এহসানুল কবির বলেন, 'জিপিএ কমানো কিংবা বাড়ানো—এরকম কোনো লক্ষ্য বা মিশন নিয়ে আমরা কাজ করি নি। আমাদের মিশন ছিল পরীক্ষাটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা।'
'আমাদের পরীক্ষকদের প্রতি বিশেষ কোনো নির্দেশনা ছিল না। আমরা বলেছি, আপনারা শিক্ষক; শিক্ষার্থীদের যা প্রাপ্য তাই দিবেন, যা প্রাপ্য নয় তা দিবেন না। অর্থাৎ মূল্যায়ন পদ্ধতিটিও যথাযথভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর ফলাফল আমাদের হাতে এসেছে।'
তিনি বলেন, '২০২১-২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষা করোনা মহামারীর জন্য সাবজেক্ট ম্যাপিং, অর্ধেক সিলেবাস এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে আইসিটি বাদ দিয়ে নিতে হয়েছে। উক্ত বছরগুলো বাদ দিয়ে ২০১৮-২০২০ সালের দিকে তাকালে দেখা যাবে পাশের হার ৮০ শতাংশের উপরে ছিল না।'
তিনি আরও বলেন, 'উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আমাদের উর্ধ্বতন মহল থেকে কোনো বিশেষ নির্দেশনা কিংবা চাপ ছিল না। আমরা পরীক্ষকদের বলেছি— আপনাদের কাছে বিশেষ কোনো নির্দেশনা নেই। তবে, অনুরোধ করেছি— সময় দিয়ে যথাযথভাবে খাতা মূল্যায়ন করবেন।'
বরিশাল বোর্ডে এ বছর পাসের হার সর্বনিম্ন (৫৬.৩৮ শতাংশ)। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'বরিশাল অঞ্চলে নদী-খাল-বিল বেশি। যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই দুর্বল—সেটি একটি দিক। এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে শিক্ষকরাও যেতে চান না, থাকতে চান না। ফলাফলে এ বাস্তবতা উঠে এসেছে। এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে বিশেষভাবে নজর দিতে পারবেন বলে আমরা আশা করি।'