আন্দোলন শেষে ৪২ দিন পর তালা খুললো নগর ভবনের, ৪৩ দিন পর কাজে ফিরলেন প্রশাসক

আন্দোলনের ৪৩ দিন পরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কার্যালয় নগর ভবনে প্রবেশ করলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া। এসময় তিনি সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানান।
টানা ৪২ দিন নগর ভবন অবরুদ্ধ থাকার পরে বৃহস্পতিবার প্রশাসকের দপ্তর খুলে দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে প্রশাসক দেড়টার দিকে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন শাহজাহান মিয়া।
প্রশাসক শাহজাহান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, "আমরা আর পেছনের দিকে তাকাতে চাই না। আমাদের সামনে অনেক কাজ সেই কাজগুলো আমরা করবো৷ নগরবাসীদের আমরা আশ্বস্ত করতে চাই যে, আমরা সকল নাগরিক সেবা অব্যাহত রাখবো। আমরা আগামী শুক্র ও শনিবার অফিস খোলা থাকবে। আমার যারা সহকর্মী আছে তাদের নিয়ে সবাই আমরা কাজ করবো।"
তিনি তিনটি কাজকে গুরুত্ব দিতে চান আগামী কয়েকদিনে। সেগুলো হলো, মশক নিধন কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা ও আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ন।
প্রশাসক বলেন, "আমরা জনগণকে যে নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি সেটিকে আরও কার্যকরী করবো। আমাদের বাজেট প্রণয়নের কাজ চলছে।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের সংকটের মধ্যেও কাজ চলছে কখনও কাজ বন্ধ ছিল না। তবে আজকে থেকে সবাই প্রাণ খুলে কাজে মনোযোগ দিবেন। আমি আমার সকল অফিসারকে বলেছি আপনারা সবাই অফিসে চলে আসেন। আমাদের বড় কাজ হচ্ছে বাজেট প্রস্তুত করা।"
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জাতীয়তাবাদী কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আরিফ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বাবুসহ "আমরা ঢাকাবাসী" ব্যানারে আন্দোলনরত ইশরাক সমর্থকরা প্রশাসককে স্বাগত জানায় এবং তাকে সকল ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেয়।

বেলায়েত হোসেন বাবু বলেন, "আমরা সিটি কর্পোরেশনের সকল কাজে প্রশাসককে সহযোগিতা করবো। কাজগুলো গতিশীল করতে আমরা প্রশাসক স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী আগাবো।
কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আরিফ চৌধুরী টিবিএসকে বলেন, "আমরা মেয়র মহোদয়ের (ইশরাক হোসেন) নির্দেশনা পেয়েছি প্রশাসক স্যারকে সহযোগিতা করার জন্য। আমরা প্রশাসকের সাথে কথা বলেছি তিনি আমাদের উৎসাহ দিয়েছেন। আমরা প্রশাসক স্যার, ইঞ্জিনিয়ার দপ্তরসহ সকল কাজে সহযোগিতা করবো।'
তিনি আরও বলেন, "অফিশিয়ালি আর কোনো অবস্থান কর্মসূচি নেই ঢাকাবাসী কিংবা শ্রমিক ইউনিয়নের। আনঅফিশিয়ালি অবস্থান থাকবে যাতে কেউ আতঙ্ক ছড়াতে না পারে।"
গত রোববার ডিএসসিসি প্রশাসক ও সচিবের দপ্তর ব্যতীত বাকি দপ্তর ও আঞ্চলিক অফিসগুলো খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। ওইদিন দুপুর ১ টার দিকে নগর ভবনে আন্দোলনরত ইশরাক সমর্থকদের পক্ষে এই ঘোষণা দেন আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক মশিউর রহমান।
মশিউর রহমান বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিসসহ নাগরিক সেবা খাত চালু রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কর্মরতদের নিজ নিজ কাজে ফিরে যেতে আহ্বান জানাচ্ছি। তবে নগরভবনে ইশরাক হোসেনকে মেয়রের শপথ দিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে ঢাকাবাসী।
এর আগে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের শপথ পড়ানোর দাবিতে ইশরাক সমর্থক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটির কর্মচারীদের একটি অংশ গত ১৫ মে থেকে তালাবদ্ধ করে রেখেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবন।