সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযুক্তদের পক্ষে প্রচার, সমাবেশ, বিবৃতি নিষিদ্ধ করে অধ্যাদেশ জারি

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তি বা সংগঠনের পক্ষে প্রেস বিবৃতি, সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট বা জনসমাবেশসহ যেকোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধ করে অধ্যাদেশ জারি করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
গতকাল (১১ মে) রাতে তিনি এ অধ্যাদেশ জারি করেন। এর মাধ্যমে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে।
এর আগে, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সংশোধিত খসড়াটি অনুমোদিত হয়।
আইনের ২০ ধারার (১) উপধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তিকে উক্ত আইনের ধারা ১৮ এর বিধান অনুসারে তালিকাভুক্ত করা হয় বা কোনো সত্তাকে নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে, এই আইনে বর্ণিত অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াও সরকার, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, নিম্নবর্ণিত যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, যথা:-
(ক) উক্ত সত্তার কার্যালয়, যদি থাকে, বন্ধ করে দেবে;
(খ) ব্যাংক এবং অন্যান্য হিসাব, যদি থাকে, অবরুদ্ধ করবে, এবং তার সব সম্পত্তি জব্দ বা আটক করবে;
(গ) নিষিদ্ধ সত্তার সদস্যদের দেশত্যাগে বাধা নিষেধ আরোপ করবে;
(ঘ) সব ধরনের প্রচারপত্র, পোস্টার, ব্যানার অথবা মুদ্রিত, ইলেকট্রনিক, ডিজিটাল বা অন্যান্য উপকরণ বাজেয়াপ্ত করবে; এবং
(ঙ) নিষিদ্ধ সত্তা কর্তৃক বা তার পক্ষে বা সমর্থনে যেকোনো প্রেস বিবৃতির প্রকাশনা, মুদ্রণ বা প্রচারণা, সংবাদ সম্মেলন বা জনসম্মুখে বক্তৃতা প্রদান নিষিদ্ধ করবে।
গতকালই (১১ মে) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো, সংশোধিত খসড়ায় একটি নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে নিষিদ্ধ ব্যক্তি বা সংগঠনের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হবে।


বৈঠকের সারসংক্ষেপে বলা হয়, কতিপয় সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিরোধ এবং উহাদের কার্যকর শাস্তির বিধানসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়ন করার নিমিত্ত সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ প্রণয়ন করা হয়।
উক্ত আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, কোনো ব্যক্তি বা সত্তা সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত রয়েছে মর্মে যুক্তিসঙ্গতকারণের ভিত্তিতে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত ব্যক্তিকে তফসিলে তালিকাভুক্ত করতে পারে বা সত্তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা ও তফসিলে তালিকাভুক্ত করতে পারে। তবে বর্তমান আইনে কোনো সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণের বিষয়ে কোনো বিধান নেই।
উক্ত বিষয়টি স্পষ্টীকরণসহ বিধান সংযোজন আবশ্যক হেতু সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-কে সময়োপযোগী করে উক্ত আইনের অধিকতর সংশোধন সমীচীন ও প্রয়োজন।
বর্ণিত প্রেক্ষাপটে সন্ত্রাস বিরোধী আইন সংশোধন করে সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, প্রয়োজনীয় অভিযোজন করা এবং অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার নিষিদ্ধকরণের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আগামীকাল সংশোধনীটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হতে পারে।