আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্তে বিএনপি আনন্দিত: মির্জা ফখরুল

অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম 'বন্ধ রাখার' সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ রোববার (১১ মে) এক বিবৃতিতে জানান, বিলম্বে হলেও সরকারের এ সিদ্ধান্ত যথাযথ।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'আমরা আনন্দিত যে, গতরাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ ও সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'
গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার গতকাল শনিবার (১০ মে) রাতে জরুরি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দলটিকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বৈঠক শেষে রাত ১১টার দিকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, 'আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'
সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বিএনপি দাবি করে, দীর্ঘদিন ধরে তারা আওয়ামী লীগকে 'ফ্যাসিবাদী দল' আখ্যা দিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আসছিল। ১০ ফেব্রুয়ারি ও ১৬ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে বিএনপি লিখিতভাবে এ দাবিও জানায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমরা সবসময় বলে আসছি, আইনি প্রক্রিয়াতেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা উচিত। বিভিন্ন ফোরামে আমরা তা তুলে ধরেছি।'
তবে তিনি মন্তব্য করেন, সরকার যদি আগে থেকেই এ সিদ্ধান্ত নিত, তবে 'চাপের মুখে পদক্ষেপ নেওয়ার বিব্রতকর পরিস্থিতি' এড়ানো যেত।
এছাড়া, প্রশাসনিক আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিরোধিতা করে বিএনপি বলেছে, আগের ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় জামায়াতে ইসলামীর ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তেরও তারা বিরোধিতা করেছিল।
বিবৃতিতে দ্রুত নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'জনগণ ১৬ বছর ধরে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য নিপীড়ন সহ্য করে আসছে, কিন্তু সেই দাবি এখনো পূরণ হয়নি।'
একইসঙ্গে তিনি নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না হওয়ায় জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি হওয়ার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান।