কাতারে প্রধান উপদেষ্টা, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির অধীনে আরও ১০-১২ কার্গো এলএনজি চাইবে বাংলাদেশ

প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের কাতার সফরে বিদ্যমান দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায়, আরও ১০-১২টি এলএনজি কার্গো সরবরাহের অনুরোধ জানাবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি মাতারবাড়ীতে ১ হাজার এমএমসিএফডি সক্ষমতার একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল এবং একটি তেল শোধনাগার স্থাপনে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হবে দেশটির কাছে।
এই উদ্দেশ্যে আজ (মঙ্গলবার) "আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫"- এর সাইডলাইনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফৌজুল কবির খান কাতারের জ্বালানিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সাদ শেরিদা আল-কাবি'র সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সাদ শেরিদা কাতার এনার্জির ডেপুটি চেয়ারম্যান, প্রেসিডেন্ট এবং সিইও হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কাতারের বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে— বাংলাদেশ আগামীকালের মধ্যে এলএনজি আমদানি বাবদ ৩৭ মিলিয়ন ডলারের পুরো বকেয়া পরিশোধের ব্যবস্থা নিচ্ছে।
বাংলাদেশ বর্তমানে কাতারের সঙ্গে দুটি দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি সরবরাহ চুক্তির আওতায় এলএনজি আমদানি করছে। প্রথম চুক্তির আওতায়, প্রতিবছর ৪০ কার্গো এলএনজি পাওয়া যাচ্ছে।
দ্বিতীয় চুক্তির কার্যকারিতা শুরু হবে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে; যার আওতায় প্রতি বছর ২৪ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করা হবে, প্রতিটির পরিমাণ ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ।
কাতার সফরে বাংলাদেশের প্রত্যাশা সম্পর্কে জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আজ বলেন, "আমাদের উপদেষ্টা (ফাওজুল কবির) আজ কাতারের জ্বালানিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সেখানে আমরা প্রথম দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায়, আরও ১০ থেকে ১২টি এলএনজি কার্গো সরবরাহের অনুরোধ জানাব।"
সচিব আরও জানান, "আমরা কাতারের কাছে মাতারবাড়ীতে একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল ও একটি তেল শোধনাগার নির্মাণে বিনিয়োগের-ও অনুরোধ জানাচ্ছি।"
২০১৭ সালে কাতার এনার্জি এলএনজি (পূর্ব নাম কাতারগ্যাস)-এর সঙ্গে প্রথম চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। ১৫ বছরের এই চুক্তি অনুযায়ী, তারা বছরে ১.৮ থেকে ২.৫ মিলিয়ন টন এলএনজি সরবরাহ করবে, যেখানে প্রতি এমএমবিটিইউতে মূল্য ধরা হয়েছে ১০ দশমিক ১১৪ ডলার।
২০২৩ সালে দ্বিতীয় চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় কাতার এনার্জি ট্রেডিং এলএলসি'র সঙ্গে। এর আওতায়, ১৫ বছর মেয়াদে প্রতি বছর ১.৫ মিলিয়ন টন এলএনজি সরবরাহ করা হবে, যার দাম নির্ধারিত হয়েছে ১০ দশমিক ০৭ ডলার প্রতি এমএমবিটিইউ।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের কাতারে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম অর্থনীতি ও জ্বালানি খাতে মধ্যপ্রাচ্যের ধনাঢ্য দেশটির সঙ্গে সম্ভাব্য সম্পৃক্ততার পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "জ্বালানি ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করাই এই সফরের মূল উদ্দেশ্য।"