আইএমএফ’র কাছে সরকারি বিনিয়োগ কমার ব্যাখ্যা দিলো পরিকল্পনা কমিশন

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাধ্যমে সরকারি বিনিয়োগ কমার কারণ জানতে চেয়েছে আইএমএফ।সোমবার (৭ এপ্রিল) পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ এবং সফররত আইএমএফের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ ব্যাখ্যা চায় সংস্থাটি।
এই বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, সরকারের রাজস্ব আহরণের ওপর ভিত্তি করে এডিপির আকার নির্ধারণ করে অর্থ মন্ত্রণালয়। ফলে এই বিষয়ে অর্থ অর্থ মন্ত্রণালয়ই ভালো উত্তর দিতে পারবে।
এছাড়া, বাস্তবায়ন সক্ষমতার কারণেও অনেক সময় সরকারি বিনিয়োগ কমে যায়। ফলে প্রতিবছর এডিপিতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা সংশোধিত এডিপিতে কমে যায়।
প্রতি অর্থবছরেই এ ধরণের ঘটনা ঘটছে বলে আইএমএফর প্রতিনিধি দলকে জানানো হয় বলে সভায় উপস্থিতি সূত্রে জানা গেছে।
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব এবং কার্যক্রম বিভাগের সদস্য ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুনসহ পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
গত মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় সংশোধিত এডিপির আকার কমিয়ে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা করা হয়। চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
আবার গত অর্থবছরের সংশাধিত এডিপি বরাদ্দের তুলনায় চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির বরাদ্দ ২৯ হাজার কোটি টাকা, যা গত বছরের বরাদ্দের চেয়ে ১১.৮৩% কম।
সাধারণত আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রতি অর্থবছর সংশোধিত বরাদ্দ (আরএডিপি) বাড়ে, তবে এবার তা কমেছে। গত অর্থবছরে সংশোধিত এডিপি বরাদ্দ ছিল ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টদের মতে, গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে বাস্তবায়ন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এমনিতে সংশোধিত বরাদ্দ কমেছে, তার ওপরে বর্তমান বাস্তবতায় বরাদ্দের অর্থে ব্যয় নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, পরিকল্পনা কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আইএমএফ সরকারের প্রতি অপ্রয়োজনীয় ও অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
একইসঙ্গে, উন্নয়ন প্রকল্পে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের ওপরও জোর দিয়েছে সংস্থাটি।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উন্নয়ন প্রকল্পে স্বচ্ছতা আনতে আইএমএফর নির্দেশনা অনুযায়ী বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট জনগণের গণের মতামত নেওয়ার সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
উন্নয়ন প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চলমান প্রতিটি প্রকল্পের হালনাগাদ তথ্য এএমএস সফটওয়্যারে অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এছাড়া, উন্নয়ন প্রকল্পের তদারকির কার্যক্রম জোরদার করতে আইএমইডির অধীনে একটি অধিদপ্তর গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্প তদারকি কার্যক্রম সহজ হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, উন্নয়ন প্রকল্পে স্বচ্ছতা আনতে সরকারি ক্রয় আইনের সংশোধনের প্রক্রিয়াও শেষ পর্যায়ের রয়েছে।
এছাড়া, আইএমএফ'র নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে আরও গুরুত্ব দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা।