‘নুরাল পাগলার’ দরবারে হামলায় নিহতের বাবার মামলা, আটক আরও ২

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় নিজেকে 'ইমাম মাহাদী' দাবি করা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার কবরকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশের উপর হামলা, গাড়ী ভাংচুর, দরবারে হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও নুরাল পাগলার এক অনুসারীকে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ও পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে।
সোমার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে নুরাল পাগলার ভক্ত নিহত রাসেল মোল্লার বাবা আমজাদ মোল্লা বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার জনকে আসামি করে গোয়ালন্দ থানায় হত্যাসহ অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো, ক্ষতিসাধন, চুরি ও জখমের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় গতকাল রাতে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন লতিফ ইমাম ও আসলাম শেখ।
আজ মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরীফ আল রাজীব।
তিনি জানান, গত শক্রবার রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৩ হাজার ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শরীফ আল রাজীব আরও বলেন, 'এ পর্যন্ত দুটি মামলায় ১৬ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।'
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর। এদিন জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ উপজেলা আনসার ক্লাব চত্বরে জড়ো হয়ে একদল লোক নুরাল পাগলার আস্তানার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তারা সেখানে হামলা চালিয়ে পুলিশের দুটি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) একটি গাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করে। দরবার শরিফে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। হামলাকারীদের ছোড়া ইট-পাটকেলে পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। পরে একদল উত্তেজিত জনতা কবর থেকে নুরাল পাগলার লাশ তুলে স্থানীয় পদ্মার মোড়ে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এ সময় নুরাল পাগলার অনুসারী রাসেল মোল্লাকে পিটিয়ে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট নুরাল পাগলার মৃত্যুর পর তার বাড়ির সামনে প্রায় ১২ ফুট উঁচু একটি কাঠামোর ভেতরে তাকে কবর দেওয়া হয়। কবরটিকে কাবা শরীফের আদলে রং করা এবং 'হযরত ইমাম মাহদী (আ.) দরবার শরীফ' লেখা ব্যানার টাঙানো হয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়।