গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের ৮৭ শতাংশই গুলিতে, ৫ শতাংশ খুন পিটুনিতে: মানবাধিকার সংস্থার জরিপ

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের মধ্যে প্রায় ৮৭ শতাংশ গুলির আঘাতে মারা গেছেন। আর ৫ শতাংশকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত 'হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশনস স্টাডি রিপোর্ট' শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরেন এমএসএফ কর্মকর্তা নূরুননবী শান্ত।
আন্দোলনের মোট ১২ হাজার ৪৩৫ জন আহত বা নিহতদের পরিবারের সদস্যদের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। এতে ৮৮১ জন নিহতের তথ্য উঠে আসে।
নিহতদের মধ্যে ৭৬৫ জন (৮৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ) গুলির আঘাতে মারা যান, ৬৯ জন (৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ) আগুনে পুড়ে মারা যান এবং ৪৫ জনকে (৫ দশমিক ১১ শতাংশ) পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
এছাড়া ১ জন (শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ) ছুরিকাঘাতে এবং ১ জন (শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ) ইটের আঘাতে নিহত হয়েছেন।
নূরুননবী শান্ত জানান, গত বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর ওপর ভিত্তি করে এই জরিপ পরিচালিত হয়।
জরিপের তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে ৬৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ছিলেন। এছাড়া শ্রমিক ছিলেন ১৮ দশমিক ৬২ শতাংশ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ, বেসরকারি চাকরিজীবী ২ দশমিক ৬১ শতাংশ, কৃষক ১ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, শিক্ষক শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং ডাক্তার শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ। বাকিরা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনায় নিহত, আহত, নির্যাতনের শিকার, হুমকির সম্মুখীন, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, নিখোঁজ, মন্দির ও মাজারে আক্রমণের শিকার হয়েছেন ১১ হাজার ৩৪৮ জন।
এর মধ্যে সাত হাজার ৮৭৩ জন আহত, ৯৩৩ জন হুমকির শিকার, ৭৩১ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং ৫৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
৫ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৮৭৬টি, যার মধ্যে অগ্নিসংযোগ ৩৩৩টি, ভাঙচুর ও লুটপাট ৩০০টি, সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়িতে হামলা ২২৩টি এবং মন্দির ও মাজারে হামলার ঘটনা ২০টি।
অনুষ্ঠানে এমএসএফ-এর প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট মো. সাইদুর রহমান সভাপতিত্ব করেন।
এতে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সালমা আলী, জুলাই আন্দোলনে নিহত নাজমুলের মা নাজমা আক্তার, খালিদ হাসান সাইফুল্লার বাবা খাইরুল হাসান এবং চাঁনখারপুলে আহত রকিবুল হাসান।