রমজানে বিভাগীয় শহরে ট্রাকে চাল, তেল ও ডাল বিক্রি করবে টিসিবি

আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ঢাকাসহ দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিশেষ ট্রাক সেল কার্যক্রম চালাবে। এ কার্যক্রমের আওতায় ভর্তুকি মূল্যে চাল, ডাল ও ভোজ্যতেল বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয় ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এ তথ্য জানান।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ভোজ্যতেল, চাল এবং তেল এই তিনটি পণ্য ঢাকার বাহিরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। পুরো রোজার মাসজুড়ে বিশেষ ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করা হবে। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেও এই কার্যক্রম চলবে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আটটি বিভাগীয় শহরে টিসিবির পণ্য বিক্রির নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। অর্থ উপদেষ্টা দেশের বাইরে থাকায় এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা।
এদিকে সারা দেশের স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারগুলোর মাঝে ভর্তুকি মূল্যে নিয়মিত পণ্য বিক্রি অব্যাহত রেখেছে টিসিবি। সোমবার থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী কার্যক্রম ছাড়াও খোলা ট্রাকে ভর্তুকি মূল্যে বোতলজাত সয়াবিন তেলসহ পাঁচটি পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে সংস্থাটি।
এ কার্যক্রমের আওতায় একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল ও ছোলা, এক কেজি চিনি এবং ৫০০ গ্রাম খেজুর কিনতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম রাখা হচ্ছে ১০০ টাকা। প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকা, মসুর ডাল ও ছোলা ৬০ টাকা এবং খেজুর ও চিনি ১৫৬ টাকা দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
সিঙ্গাপুর থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত
এর আগে ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনাম থেকে চাল আমদানি করলেও, এবার সরকার চাল আনছে সিঙ্গাপুর থেকে। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এজন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর থেকে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬৫ কোটি ২০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। প্রতি টন চালের দাম পড়বে ৪৩৪ দশমিক ৭৭ ডলার। সিঙ্গাপুরের 'অ্যাগ্রো কর্প ইন্টারন্যাশনাল' থেকে এই চাল সংগ্রহ করবে খাদ্য অধিদপ্তর।
বৈঠকে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এক কার্গো তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। প্রতি ইউনিট (এমএমবিটিইউ) ১৬ দশমিক ৭৭৫০ ডলার দরে 'মেসার্স ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড' থেকে এই এলএনজি সংগ্রহ করবে সরকার। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৭৭৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
এছাড়া, রাশিয়া থেকে ৩০ হাজার টন এমওপি সার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৩০ হাজার টন রক ফসফেট আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়েছে, যার জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯০ কোটি ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা।