Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Monday
May 12, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
MONDAY, MAY 12, 2025
এক পিতার অদ্ভুত শখ, কন্যার জন্য সংগ্রহ করেন কুপিবাতি!

ফিচার

সালেহ শফিক
27 July, 2023, 12:50 pm
Last modified: 27 July, 2023, 01:43 pm

Related News

  • ঘর তার দুর্লভ সব সুরমাদানির ভাঁড়ার
  • বই সংগ্রহই তাদের নেশা!
  • ইতিহাসের ধুলিমাখা পুরাকীর্তি ও সংগ্রাহকদের ঝলমলে দুনিয়া
  • পঞ্চদশ শতাব্দীর চীনা বাক্স পাওয়া গেল ধুলোপড়া কেবিনেটে, উঠবে নিলামে
  • ৪০০০ বছর পুরোনো হাজার কুড়ি কয়েন আর বিশ্বের প্রথম ডাকটিকিট আছে যার সংগ্রহে

এক পিতার অদ্ভুত শখ, কন্যার জন্য সংগ্রহ করেন কুপিবাতি!

শারাবান তহুরা তখনো পৃথিবীতে আসেনি। আরো অন্তত ১৫ বছর পরে সে পৃথিবীর আলো দেখবে। কিন্তু  পিতা মো. সহিদুল ইসলাম অনাগত সন্তানের কথা ভেবেই ব্যতিক্রমী সংগ্রহের এক ভাণ্ডার গড়ে তুলছেন। শারাবান তহুরার বয়স এখন সাত। এবছরই ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়েছে। বাবার সংগ্রহের প্রতি কন্যারই আগ্রহ বেশি। দেড়শর বেশি কুপিবাতি তিনি সংগ্রহ করেছেন এ পর্যন্ত 
সালেহ শফিক
27 July, 2023, 12:50 pm
Last modified: 27 July, 2023, 01:43 pm

কাঁচের তৈরি কয়েকটি কুপিবাতি/ ছবি সৌজন্য: সহিদুল ইসলাম

শারাবান তহুরা তখনো পৃথিবীতে আসেনি। আরো অন্তত ১৫ বছর পরে সে পৃথিবীর আলো দেখবে। কিন্তু  পিতা মো. সহিদুল ইসলাম অনাগত সন্তানের কথা ভেবেই ব্যতিক্রমী সংগ্রহের এক ভাণ্ডার গড়ে তুলছেন। সেগুলো সহিদ ছোটবেলায় দেখেছেন দাদা ও নানা বাড়িতে। কোনো কোনোটি নিজে ব্যবহারও করেছেন। সহিদের উদ্দেশ্য নতুন ও পুরানের মেলবন্ধন ঘটানো। শারাবান তহুরা ও তার বন্ধুরা কাজলদানি, আতরদানি, হ্যাজাকবাতি, কুপি রাখার গাছা, কুপিবাতি ,হারিকেনের গল্প হয়তো শুনবে, দেখার সুযোগ কি পাবে? তাইতো সহিদ গড়ে তুলছেন পুরানো দিনের কথা মনে পড়িয়ে দেওয়া এক সংগ্রহশালা।

সহিদের শৈশব কেটেছে বানারিপাড়া উপজেলার পশ্চিম মলুহার নামের এক প্রত্যন্ত গ্রামে। পিরোজপুর, বরিশাল আর গোপালগঞ্জ- তিন জেলার সীমান্তবর্তী এ গ্রাম। ২০০০ সালের আগে গ্রামটিতে বিদ্যুতের বাতি জ্বলেনি। অথচ ততদিনে সহিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকাতে বসাছে। স্কুল ও কলেজবেলায় গভীর রাত অবধি সহিদের সঙ্গী থাকত কুপিবাতি। সেই বাতিটিকে পরম মমতায় আজো আগলে রেখেছেন সহিদ। তিনি পড়তে ভালোবাসতেন, পাঁচ হাজার বইয়ের এক সংগ্রহ গড়ে তুলেছিলেন। তাদের কাচারিঘরের পাঁচটি আলমিরা বইয়ে ঠাসা ছিল। এখন অবশ্য সব বই নেই। ৩৫ বছর হতে চলল বাড়ি থেকে দূরে তিনি। এখন অনুষ্ঠানাদিতেই কেবল যাওয়ার সুযোগ হয়। কিছু বই পোকায় কেটেছে, কিছু বন্ধু-বান্ধবরা নিয়ে গেছে। বই দিয়েই সহিদের সংগ্রহ শুরু।

বল্লম, হারিকেন, হ্যাজাক

কুপিবাতির শোকেসের সামনে কন্যা শারাবান তহুরা ও পিতা সহিদুল ইসলাম

সহিদ  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (তখন কলেজ) থেকে ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর হন। পড়া শেষ করে গ্রামে গিয়ে বছর দুই শিক্ষকতা করেছেন। তারপর আবার ঢাকায় এসে বাংলা একাডেমিতে কাজ নেন। সেটা ২০০৫ সাল। সংগ্রহের নেশা এই সময় থেকেই শক্ত হয়ে চেপে বসে। সহিদ সাত ভাইবোনের সবার ছোট। নানার ছিল কাঠের ব্যবসা মুন্সিগঞ্জের কমলাঘাটে। নানার বাবা কাঠের কাজ জানতেনও ভালো। তার হাতে গড়া নকশাবহুল খিলানসদৃশ একটি  কাষ্ঠখণ্ড সহিদের সংগ্রহে আছে। সহিদ দেখালেন, এটি ব্যবহৃত হতো টুথপিক রাখার জন্য। কাঠের টুকরার বর্হিগাত্রে অনেকগুলো ছোট ছোট ছিদ্র, ভিতরেও কম নেই। এসব ছিদ্রেই গুজে রাখা হতো টুথপিকগুলো। অবাক হওয়ার মতো এক জিনিস। এটি কাঠের খুঁটিতে ঝুলিয়ে রাখা হতো বিয়ে বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের সুবিধার্থে।

কয়েকটি মাটির তৈরি কুপিবাতি

সহিদের আগারগাঁও বাসার বসার ঘরটিতে সে সংগ্রহশালা। যার উপকরণ তিনি দিনে দিনে বাড়িয়ে চলেছেন। ঘরটি দুই ভাগে বিভক্ত। আলমারি, শোকেস ও পর্দা দিয়ে প্রথম ভাগ দ্বিতীয়টি থেকে আলাদা করা হয়েছে। প্রথম ভাগের দেয়ালে বাঁশ-বেতের কুলা, ডুলা, খলুই ও তীর-ধনুকসহ আরো অনেক কিছু ঝুলছে। মেঝেতে রাখা আছে দুর্লভ বল্লম। দূরের বস্তু ঘায়েল করার অন্যতম অস্ত্র ছিল এই বল্লম; বন্দুক আবিস্কারের আগে। এর মাথা হতো চোখা ও ধারালো। রাজবাড়ির সদর দরজায় বল্লম হাতে দাঁড়িয়ে থাকা সেপাইয়ের ছবি অনেকেই দেখে থাকবেন। চর দখলের লড়াইয়ে বল্লমের ব্যবহার  এখনো কোনো কোনো এলাকায় অবশিষ্ট আছে।

অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি কিছু কুপি

ঘরের একটি আলমারির বাইরের দিকে পেরেক দিয়ে কয়েকটি হারিকেন  ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এগুলোর কোনোটি ক্রাউন কোম্পানির, কোনোটি ডায়মন্ডের। তাজ আর এভরিবডি কোম্পানিরও আছে। একটি ব্রিটিশ হারিকেন আছে তার সংগ্রহে যেটি লম্বায় এক ফুটের  মতো হবে। মাঝ বরাবর কাঁচ লাগানো যেখান থেকে আলো বের হয়। তেল রাখার জায়গা নিচের দিকে আর কাচের ওপর দিকে ধোঁয়া  বেরুনোর পথ। দুই পাশে সরু তারের হাতল আছে। দেখে মনে হয় গভীর রাতে বরফ ঢাকা পথে চলার জন্য হারিকেনটি বহুবার ব্যবহৃত হয়েছে। এর গায়ে ওয়েলস লেখা আছে।                          

ঘরের মেঝেতে রাখা আছে হ্যাজাক বাতি। এগুলোর একটি পোল্যান্ডের অন্যটি জার্মানির পেট্রোম্যাক্স। আমেরিকার একটি আর চীনেরও আছে একটি করে। নানাবাড়ির হ্যাজাক বাতিটিও সংগ্রহে রেখেছেন সহিদ। ঘরের উত্তর পশ্চিম কোনায় একটি গ্রামোফোনও আছে। 

পানদানে স্বদেশীদের চিঠি

কুপিবাতি, হ্যাজাক, হারিকেন ও গাছার সামগ্রিক সংগ্রহ

এবার শোকেসের দিকে নজর দিতেই অ্যালুমিনিয়ামে তৈরি সুপারি কাটার যাঁতি দেখলাম। যাঁতির পাশ থেকে সহিদ বের করে আনলেন একটি ব্যতিক্রমী পানদান। ময়ূরের গড়নে তৈরি সেটি। দৈর্ঘ্যে যেমন প্রস্থেও বড়। সারা শরীরে কারুকাজ। পেছন দিকে পান রাখার জায়গা আর সামনের ঢাকনা খোলার পর জর্দ্দা ও অন্য মশলা রাখার পাঁচটি খোপ। তবে এর বিশেষত্ব হলো খোলের নিচের অংশে বেশকিছু জায়গা ফাঁকা। সহিদ বললেন, 'আমি এক লেখায় পড়েছি স্বদেশি আন্দোলনকারীরা এই ফাঁকা জায়গায় লুকিয়ে চিঠি বিনিময় করতেন। তারপর থেকেই এটি পাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। শেষে বছর তিন আগে পানদানটি আমার সংগ্রহে আসে।' এরপর সহিদ একটি কাজলদানি দেখালেন যার ওপরে রানী ভিক্টোরিয়ার ছবি খোদাই করা। 

দুর্লভ সংগ্রহ পাখি কুপিবাতি

তারপর দেখালেন একটি বিস্ময়কর আতরদানি। রুপার তৈরি আতরদানিটির চারধার ঝালর দিয়ে ঘেরা আর তা এত সূক্ষ্ম ও বাহারি যে দীর্ঘক্ষণ ধরে দেখেও আশ মেটে না। সহিদের সংগ্রহের দুটি বিশেষ দিক আছে- এক. শৈশবে দেখেছেন এমন জিনিষপত্র তিনি সংগ্রহ করেন। দুই. পিতল, টিন, কাঁসা আর অ্যালুমিনিয়ামে তৈরি উপকরণ তার ভাণ্ডারে বেশি।

কুপিবাতি রাখার গাছা

সূক্ষ্ম ও বাহারি কাজের এসব উপকরণ তৈরিতে দীর্ঘসময় তো লাগত, এত সময় কোথায় পেত সেকালের শিল্পীরা? উত্তরে সহিদুল ইসলাম বললেন, 'আগেরদিনের কারিগররা ছিল নির্যাতিত। পেটেভাতে কাজ করত তারা। রাজা বা নবাবের শখ মেটাতেই তাদের জীবন ব্যয় হতো। তাই দিনের পর দিন ধরে তারা এসব কাজে লেগে থাকত। মহারাজের ইচ্ছার বাইরে যাওয়ার সুযোগ তাদের ছিল না।'

দেড়শর বেশি কুপিবাতি

ছবি সৌজন্য: সহিদুল ইসলাম

এবার সহিদ তার সেই সংগ্রহ যা গুপ্তধনের সমান মূল্যবান, কুপিবাতিগুলো দেখাতে শুরু করলেন। এগুলো প্রকারে এতই বৈচিত্র্যময় যে দেশের বিখ্যাত সংগ্রহকারীদের একজন নাজমুল হক মন্টু একে অনন্য আখ্যা দিয়েছেন। দেড়শর বেশি কুপিবাতি তিনি সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে ছয়-সাতটি পাখি সিরিজের। এগুলো সাজাতে শারাবান তহুরা সাহায্য করল পিতাকে। কুপিগুলোর গড়ন পাখির মতো। কেরোসিন দেওয়া হয় মোটা পেটের ভিতর। নিচের দিকের চাবি ঘোরালে পেট ফুড়ে সলতে বেড়িয়ে আসে। কোনোটি লোহার তৈরি, কোনোটি পিতলের। একটি কুপির গায়ে খুব সূক্ষ্ম নকশা আর বেশ বড়সড়। ওই নকশা ডোকরা নামে সমধিক খ্যাত। 

গাছাসহ মাটির তৈরি একটি কুপিবাতি

মহেঞ্জোদাড়োতে প্রাপ্ত ড্যান্সিং গার্ল বা নৃত্যরত নারী মূর্তি ডোকরা শিল্পের আদি নিদর্শন। এখনো পশ্চিমবেঙ্গের  বাঁকুড়া, বর্ধমান, পুরুলিয়ায় এই শিল্পের কমবেশি চর্চা হয়। এই বাতিটি সংগ্রহ করতে দুই বছর ধরে লেগে থাকতে  হয়েছে সহিদকে। এর কথা প্রথম জানতে পেরেছিলেন  সংগ্রাহকদের এক ফেসবুক পেইজ মারফত। সংগ্রাহকের বাড়ি হবিগঞ্জ। সহিদ তার সঙ্গে প্রথমে বন্ধুতা গড়ে তুললেন। তাকে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত লোকশিল্প সম্পর্কিত বইপত্র পাঠাতেন। রবীন্দ্র রচনাবলিও উপহার দিয়েছেন। একটি কুপিবাতিও পাঠিয়েছিলেন বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরুপ।  তারপর  একদিন সুযোগ বুঝে ডোকরা কুপিটি কিনতে চাইলেন। বন্ধুটি প্রথম কয়েকদিন নিরব ছিলেন। কিন্তু হাল ছাড়েননি সহিদ। তারপর একদিন ১০ হাজার টাকা দিতে চাইলেন কুপিটির দাম হিসাবে। বন্ধুত্বের কারণেই হোক বা সহিদের আন্তরিক আগ্রহ দেখে হোক বন্ধুটি আর না করতে পারেননি।

বিচিত্র সব কুপিবাতি সংগ্রহ করেছেন সহিদুল

আরেকটি পাখি কুপিবাতি দেখালেন সহিদ। এর বয়স দুইশত বছরের কম হবে না। সাধারণত কোনো জিনিস আমরা বামে  খুলে ডানে আটকাই। কিন্তু এটি হাতে তৈরি বলে উল্টো দিক থেকে খুলতে ও আটকাতে হয়। কুপিটি কুষ্টিয়া থেকে সংগ্রহ  করেছেন সহিদ। ওজনে বেশ ভারি। সহিদ বললেন, 'কুষ্টিয়া ছিল নদিয়া অঞ্চলভুক্ত আর নদিয়ায় ব্যাপকভাবে কুটিরশিল্পের বিকাশ ঘটেছিল। দুইশ বছর আগের হাতে তৈরি কুপিবাতিটি আমার সংগ্রহের অমূল্য সম্পদ বলে বিবেচনা করি।'

শারাবানের বয়স সাত মাত্র

বিশেষ গড়নের একটি কুপিবাতি

শুরুর দিকে সহীদের সংগ্রাহকদের সঙ্গে বেশি সখ্যতা ছিল না। বরং তার সংগ্রহ বাড়ছিল তাদের এসএসসি  '৯৩ ব্যাচের বন্ধুদের মাধ্যমে। ফেসবুক গ্রুপ মারফত তাদের মধ্যে নিয়মিত খবরাখবর আদান প্রদান হয়। বন্ধুদের তিনি ফোন করে বলতেন, তাদের কাছে কোনো কুপিবাতি থাকলে তাকে  দিতে অথবা খবর পেলে জানাতে। এই প্রক্রিয়াতেই তিনি  ফ্রান্সের এক  কুপিবাতি পেয়েছেন। সেটির পেট গোল, ধরার জন্য মাথা বরাবর আংটা আছে। পেটের ভেতর ফোম  ঢোকানো যেন জ্বালানি (কেরোসিন তেল) বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারে।

বিশেষ ধরনের কিছু কুপিবাতি

সহিদের একমাত্র কন্যা শারাবান তহুরার বয়স এখন সাত। এবছরই ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়েছে। বাবার সংগ্রহের প্রতি কন্যারই আগ্রহ বেশি। সে বাবাকে নতুন নতুন কুপিবাতি সংগ্রহে উৎসাহ দেয়। কুপিগুলো সাজিয়ে রাখার, পরিস্কার রাখার দায়িত্বও সে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে। এতে সহিদের আগ্রহ বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ। যদিও টাকার ব্যাপারটি তাকে মাথায় রাখতে হয় সবসময়। কিন্তু শখের কাছে টাকা নস্যি। 

সহিদ বলছিলেন, 'কোনো কোনো কুপি সংগ্রহে এত পরিমাণ সময় ও অর্থ ব্যয় হয় যে আমাদের মতো মধ্যবিত্তের জন্য তা হাতি পোষার সমতুল্য। কিন্তু শখের কাছে সবই হার মানে, এর চেয়ে মূল্যবান আর কিছুকেই মনে হয় না। বৈচিত্র্যপূর্ণ নতুন কুপি পাওয়ার আনন্দ বলে বোঝানো মুশকিল। তবে ইদানিং নতুন কুপি বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। আগে মাসে দুই-তিনটিও পেতাম, এখন দুই-তিন মাসেও একটি পাই না।'

কুপিবাতির বৈচিত্র্য কেবল সৌখিনতার কারণেই তৈরি হয়নি, প্রয়োজনের তাগিদেও হয়েছে। যেমন মাছ ধরার একটি কুপি আছে সহিদের সংগ্রহে। এর চারধার কাঁচ দিয়ে ঘেরা যেন বাতাসে বাতি নিভে না যায় আর ওপরে কিছু ফাঁকা রেখে ছাতার মতো ঢাকনা। ফাঁকা অংশটা ধোঁয়া বের হওয়ার জন্য।

সিরামিকের তৈরি একটি কুপিবাতি

একটা টু ইন ওয়ান কুপিও দেখালেন সহিদ। এটা মাঝখান থেকে দুইভাগ করা যায়। ভাগ হয়ে যাওয়ার পর আংটা দিয়ে দেয়ালে ঝোলানো যায় আর ভাগ না করলে বসানো যায় টেবিলের ওপর। গরুর গাড়ির, ঘোড়ার গাড়ির কুপিও আছে সহিদের কাছে। শেষেরটি তিনি পেয়েছেন মানিক কাঁসারির কাছ থেকে। কাঁসায় তৈরি তৈজষপত্রের জন্য তার খ্যাতি দেশের সীমানা ছাড়িয়েছে। তাকে নিয়ে গবেষণা করেছেন ভিনদেশী গবেষকরাও। বয়স তাকে ছুঁতে পারেনি, সক্রিয় আছেন এখনো।   

মাটিরও অনেকগুলো কুপি আছে সহিদের সংগ্রহে। এগুলোর দৈর্ঘ্য বৈচিত্র্য যেমন খেয়াল করার মতো আবার কারুকাজও নজর কাড়ে। নওগাঁ ও তার আশপাশের এলাকা থেকে এগুলো সংগ্রহ করেছেন সহিদ। ওই এলাকা যে টেরাকোটার জন্য বিখ্যাত সে কথা মনে পড়ে গেল দেখার সঙ্গে সঙ্গে।

নিম্নবিত্তের কুপি

বাহারি কয়েকটি কুপিবাতি

সহিদের কাছে গানের আসরের কুপি, রেলের কুপি, রাজবাড়ির ভোজের কুপিও আছে। আছে সিরামিকের তৈরি কয়েকটি অভিজাত কুপি। বাদাম বিক্রি করে যেসব ভ্যান সেগুলোয় ব্যবহৃত কুপিও আছে সহিদের সংগ্রহে। নিম্নবিত্ত মানুষের কুপি আছে কিছু যারা কালি ফুরিয়ে যাওয়ার পর দোয়াতে সলতে লাগিয়ে নিয়েছে। ওষুধের বোতলকেও কুপি বানানোর নজির দেখলাম। খাগড়াছড়ি থেকে পাওয়া একটি কুপি দেখিয়ে সহিদ বললেন, 'অঞ্চলভেদেও কিন্তু কুপির ধরন আলাদা হয়। এটা অনেকক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের কারণে ঘটে। প্রয়োজনের তাগিদে তো ঘটেই। দুর্গম পার্বত্যাঞ্চলে বাজারগুলো হয় দূরে দূরে। সপ্তাহে তারা একবার বাজারে যায়, যতটা তেল কিনে আনে তা যেন সপ্তাহ ফুরানোর আগে না ফুরায় সে চিন্তা মাথায় রেখে তৈরি করে কুপিগুলো।'

শুধু কুপি রাখার যে শোকেস আছে সহিদের তার তাকগুলো সাজানো হয়েছে তৈরি করার উপকরণ ভেদে যেমন কোনো তাকে কেবল মাটির কুপিগুলো রাখা। এমনিভাবে পিতলের, অ্যালুমিনিয়ামের কুপির আলাদা আলাদা তাক আছে। কাঁচের কুপিও আছে বেশ কয়েকটি, এগুলোর কয়েকটি আবার কামরাঙা কুপি, কারণ কামরাঙার মতো গড়ন সেগুলোর।  

হারিকেন

সহিদ কিছু গাছাও সংগ্রহ করেছেন। মোটমাট ৮টি। গাছা হলো কুপি রাখার উঁচু দণ্ড বিশেষ। মাটির, পিতলের, কাঠের তৈরি গাছাগুলো। একটি আবার সিমেন্টে তৈরি।  এক সহকর্মীর কাছ থেকে সিমেন্টের গাছাটি উপহার পেয়েছেন সহিদ।  

সহিদের সংগ্রহ দেখার আনন্দ বিশেষ রকমের। আমরা যারা মধ্যবয়সী তাদের প্রায় সকলেরই কুপিবাতির আলোয় পড়া ও লেখার অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু দেখা দূরে থাক ভাবনাতেও ছিল না কুপিবাতি এতো রকমের হয়! সহিদের ইচ্ছা গ্রামের বাড়িতে একটি জাদুঘর গড়ে তুলবেন। তিনি আশা করেন, এসব উপকরণ নতুন প্রজন্মকে শেকড়ের সঙ্গে যুক্ত থাকতে প্রেরণা যোগাবে।

Related Topics

টপ নিউজ

কুপিবাতি / সংগ্রহশালা / অ্যান্টিক সংগ্রহ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বাঁধ নির্মাণ করছে চীন, পানি সংরক্ষণ শুরু
  • ভারতীয় সামরিক বাহিনীর মেরুদণ্ড এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের পাকিস্তানি ভাষ্য
  • সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ আ.লীগের বিরুদ্ধে সরকার যেসব ব্যবস্থা নিতে পারবে
  • ব্যাংকের তহবিল প্রতারণায় এমডি-চেয়ারম্যানও দায়ী হবেন, অধ্যাদেশ জারি
  • ‘যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি স্বাভাবিক’— তবে সব পাইলট ফিরে এসেছে: ভারতীয় বিমান বাহিনী
  • সপ্তাহব্যাপী আন্দোলনের পর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অব্যাহতি

Related News

  • ঘর তার দুর্লভ সব সুরমাদানির ভাঁড়ার
  • বই সংগ্রহই তাদের নেশা!
  • ইতিহাসের ধুলিমাখা পুরাকীর্তি ও সংগ্রাহকদের ঝলমলে দুনিয়া
  • পঞ্চদশ শতাব্দীর চীনা বাক্স পাওয়া গেল ধুলোপড়া কেবিনেটে, উঠবে নিলামে
  • ৪০০০ বছর পুরোনো হাজার কুড়ি কয়েন আর বিশ্বের প্রথম ডাকটিকিট আছে যার সংগ্রহে

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বাঁধ নির্মাণ করছে চীন, পানি সংরক্ষণ শুরু

2
আন্তর্জাতিক

ভারতীয় সামরিক বাহিনীর মেরুদণ্ড এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের পাকিস্তানি ভাষ্য

3
বাংলাদেশ

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ আ.লীগের বিরুদ্ধে সরকার যেসব ব্যবস্থা নিতে পারবে

4
অর্থনীতি

ব্যাংকের তহবিল প্রতারণায় এমডি-চেয়ারম্যানও দায়ী হবেন, অধ্যাদেশ জারি

5
আন্তর্জাতিক

‘যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি স্বাভাবিক’— তবে সব পাইলট ফিরে এসেছে: ভারতীয় বিমান বাহিনী

6
বাংলাদেশ

সপ্তাহব্যাপী আন্দোলনের পর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অব্যাহতি

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net