Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

আফগানিস্তানে এক অসামঞ্জস্যপূর্ণ সমাপ্তির পর সামনে কোন ভবিষ্যৎ?

আফগানিস্তান ছেড়ে উড়াল দেওয়া শেষ আমেরিকান ফ্লাইট পেছনে রেখে গেছে অসংখ্য অপূর্ণ প্রতিশ্রুতি আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের প্রশ্ন
আফগানিস্তানে এক অসামঞ্জস্যপূর্ণ সমাপ্তির পর সামনে কোন ভবিষ্যৎ?

ফিচার

টিবিএস ডেস্ক
31 August, 2021, 10:15 pm
Last modified: 01 September, 2021, 02:48 pm

Related News

  • চীনের উদ্যোগে ‘সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে’ এগোচ্ছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান
  • জুয়ার আশঙ্কা থেকে দাবা খেলা নিষিদ্ধ করল তালেবান
  • ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা: যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধার মুখে পড়বেন আফগান ও পাকিস্তানিরা
  • প্রতিবেশির কারণে রক্ষা: আফগানিস্তানকে ধন্যবাদ, বাংলাদেশ কখনোই তলানিতে পৌঁছায় না
  • বিক্রির জন্য পান্না: তালেবানরা অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে মাটির নিচে নজর দিচ্ছে

আফগানিস্তানে এক অসামঞ্জস্যপূর্ণ সমাপ্তির পর সামনে কোন ভবিষ্যৎ?

আফগানিস্তান ছেড়ে উড়াল দেওয়া শেষ আমেরিকান ফ্লাইট পেছনে রেখে গেছে অসংখ্য অপূর্ণ প্রতিশ্রুতি আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের প্রশ্ন
টিবিএস ডেস্ক
31 August, 2021, 10:15 pm
Last modified: 01 September, 2021, 02:48 pm

কোন প্রকার উদযাপন ছাড়াই পর্দা নেমেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের দীর্ঘতম যুদ্ধমঞ্চে। কাবুলে হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের রানওয়েতে বাতাসে উড়ে আসছে ফেলে রাখা বর্জ্য, বিদেশি সেনারা চলে গেলেও এখনও উদ্ধারের আশায় বিমানবন্দরে প্রবেশদ্বারগুলোর বাইরে বৃথা অপেক্ষা করছেন অনেক আফগান। রাতের আকাশে গুলি ছুড়ে বিজয় উদযাপন করতে দেখা গেছে তালেবান যোদ্ধাদের। 

সেনা প্রত্যাহারের নাটকীয় শেষ মুহূর্তের এক দৃশ্য; কাবুল টার্মিনালের মৃদু আলোয় দুই মার্কিন মেরিন সেনার তালেবান যোদ্ধাদের সঙ্গে হ্যান্ডশেকের ঘটনা। ক্ষুধা, তৃষ্ণায় কাতর শরণার্থীরা ধূসর রঙা সামরিক বিমানে চড়ে যেভাবে কাবুল ছেড়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে রওনা হয়েছে, এ ঘটনা কেবল তার সঙ্গেই সঙ্গতিপূর্ণ। 

আফগানদের ভবিষ্যতের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করছে তালেবান নেতৃত্ব। ফলে গত ২০ বছর ধরে যেসব আফগান সুদিনের সুখস্বপ্ন দেখেছিল, তাদের সকল আশাভঙ্গ হয়েছে।  

আনুষ্ঠানিক অন্ত আসে সোমবার দিবাগত রাতেই, ১২টা বেজে ৩১ আগস্ট পূর্ণ হবার সময়সীমার মধ্যেই হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সুরক্ষায় নিয়োজিত শেষ মার্কিন সেনাদলটিকে নিয়ে আফগান ভূমি ছেড়ে উড়তে থাকে একের পর এক দানবাকৃতির সামরিক পরিবহন বিমান। এই ছিল হেরে যাওয়া যুদ্ধের অন্তিম ঘণ্টার প্রতিচ্ছবি।  

অথচ এ যুদ্ধে নিহত সৈনিকদের নামে যুক্তরাষ্ট্রে অসংখ্য পার্কের বেঞ্চ ও হাইওয়ে ওভারপাসের নামকরণ করা হয়। তাই এর মলিন অন্তের মুহূর্তগুলি কাঁটার মতই বিঁধছে মার্কিন জাতীয় অনুভূতিতে। 

যুক্তরাষ্ট্রের আগে আফগানের মাটিতে পরাজয়ের শিকার হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন। পূর্বসূরী সোভিয়েত বাহিনীর মতো সমস্ত দেশজুড়ে ধবংস হয়ে যাওয়া সাঁজোয়া যান আর ট্যাঙ্ক ফেলে যাওয়ার পরিণতি হয়নি আমেরিকানদের। তার বদলে বিজয়ী তালেবান আরও বহু বছর ব্যবহার করতে পারবে এমন বিপুল অস্ত্র-সরঞ্জাম ফেলে এসেছে তারা।  

দুই দশকের রণপ্রস্তুতির অংশ হিসেবে আফগান সেনাবাহিনী ও পুলিশকে ৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ব্যয়ে সুসজ্জিত করার ফসল আজ তালেবানের ঘরে; যাদের অগ্রযাত্রা রোধে বাহিনীগুলো দুর্বল নেতৃত্ব ও ক্রমহ্রাসমান মার্কিন সহায়তার কারণে কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি। 

কাবুলের প্রাচীন প্রাসাদ বালা হিসারের প্রাঙ্গনে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত সোভিয়েত ট্যাঙ্ক। ছবি: জিম হিউলেব্রোয়েক/ দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এম-৪ রাইফেল নিয়ে গেল শুক্রবার কাবুলে নামাজ পড়তে আসেন তালেবান নেতা খলিল হাক্কানি। ছবি: জিম হিউলেব্রোয়েক/ দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস

গত ৪০ বছর ধরে আফগান রণাঙ্গনের অলঙ্ঘিত সহিংস ইতিহাসের চক্র আরেকবার পুনরাবৃত্ত হয়েছে: সোভিয়েত আগ্রাসন অন্তের পর এনিয়ে পঞ্চমবারের মতো কোন শাসক গোষ্ঠীর পতনের মধ্য দিয়ে নতুন শাসকের উদয় ঘটলো। প্রতিবার সরকার বদলের পালাক্রমায় ঘটেছে প্রতিহিংসার পালা, পূর্বঃশত্রুতার শোধ নেয় নতুন ক্ষমতাবানেরা। ফলশ্রুতিতে; আরেক দফা বিশৃঙ্খলা ও যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যায় আফগানিস্তান। 

১৯৯৬ সালে যুদ্ধপতি মুজাহেদিন নেতাদের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার পর তাদের ওপর চরম প্রতিশোধ নেয় তালেবান। ২০০১ সালে তালেবান শাসকদের পতনের কালে পশ্চিমা বাহিনীর সঙ্গী হয়েছিল বেঁচে থাকা যুদ্ধপতি ও তাদের সমর্থকরা। তারা পরাজিত তালেবান যোদ্ধাদের ওপরও নৃশংসতা চালায়।

প্রতিহিংসার এই অনন্ত চক্রকে আবারো চলতে দেবে কিনা- তা এখন সম্পূর্ণরুপে তালেবানের ওপর নির্ভর করছে। খুনোখুনির পালা ছেড়ে তালেবান সদস্যরা চাইলে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের নেতারা যে সাধারণ ক্ষমা ও আপোষ রফার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা গ্রহণ করতে পারে। 

আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আল-কায়েদা যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। তারপর জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রতিশোধ নেওয়ার নির্দেশে আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এ যুদ্ধই পরে আমেরিকার সন্ত্রাস বিরোধী বৈশ্বিক যুদ্ধে রূপ নেয়। আজ ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থী শাসকদের কীভাবে সামলাবে! দুই দশক পর আবার সেই একই প্রশ্নের মুখে যুক্তরাষ্ট্র। এ দুপক্ষের সম্পর্কও জড়িত প্রতিহিংসা অথবা সমঝোতার প্রশ্নের সাথে। যে কোন একটি উত্তরের ভিত্তিতে আফগানিস্তান থেকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের পুনরুত্থান যেন না হয় তা যুক্তরাষ্ট্রকে সামনের দিনগুলোতে নিশ্চিত করতে হবে। 

আফগানিস্তানের গ্রামাঞ্চলে আবার ছোট পরিসরে মার্কিন বিমান হামলার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে করা এসব হামলায় নিহতদের সংখ্যা অধিকাংশ সময়েই জানা যায় না। সন্ত্রাসী সন্দেহে সাধারণ মানুষ হতাহতের ঘটনাও তাই জাতিসংঘের মতো সংস্থার রিপোর্টে সম্পূর্ণ প্রকাশিত হয় না। তবে আশার কথা হলো, বিদেশি বা আফগান সেনা যানকে টার্গেট করে তালেবান আর রাতের আঁধারে গোপনে বোমা পুঁতে রাখবে না সড়কে, অনেক সময় যার শিকার হতো যাত্রীবাহী মিনিবাস।     

কিন্তু, আফগানদের উদ্বেগ অন্যখানে। মার্কিনীদের একেবারে চলে যাওয়ার পর তালেবান শাসন কাঠামো কেমন হবে- তা নিয়ে ব্যাপক অস্বস্তি ও অসহায়ত্ব আছে। শহরবাসী আফগানদের ভয়, তালেবানের অধীনে সরকারের নানা দপ্তর অকার্যকর হয়ে পড়বে আর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় ভেঙ্গে পড়বে প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতি। নিত্যসঙ্গী হবে দারিদ্র্য, অনাহার ও নৈরাজ্য। 

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের লড়াইকে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়ে এক দীর্ঘ যুদ্ধ, যার যবনিকাপাত হয় হঠাৎ করেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো, যুদ্ধে ইতি টানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১৮ মাস আগে। সে সময়ে ট্রাম্প প্রশাসন ২০২১ সালের ১ মে নাগাদ আফগানিস্তান থেকে সকল সেনা সরিয়ে নেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। সে সময়ে করা সমঝোতার আলোকে, মার্কিন সেনাদের ওপর হামলা বন্ধের অঙ্গীকার করে তালেবান। আর দেয় আল কায়েদাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি।    

এরপর প্রত্যন্ত এলাকায় একের পর এক সম্মুখঘাঁটি আর চেকপয়েন্ট দখল নেওয়া তালেবানের দর কষাকষির পাল্লাই শুধু ভারি হয়েছে। তারা দখলে নিতে থাকে গ্রামীণ জনপদ আর জেলাগুলোকে। এভাবে চলতি বছরের শুরুর দিকেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ বড় শহর দখলের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় তালেবান। এ বাস্তবতায় ট্রাম্পের প্রতিশ্রুত সেনা প্রত্যাহারের অঙ্গীকার রক্ষার বিষয়ে পুনরায় ভাবতে থাকে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। 
 
কিন্তু, চলতি বছরের এপ্রিলে যখন বাইডেন ও ন্যাটো জোট ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়, তার আগেই তালেবান নতুন নতুন জেলা দখল শুরু করে। সে সময়েই আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের দলে দলে আত্মসমর্পণ করতে দেখা গেছে। তখনও লড়াই চালিয়ে যাওয়ারা বিপুল সংখ্যায় নিহত হয় তালেবানের হাতে। মহাসড়ক আর জনপদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একে একে প্রাদেশিক রাজধানীগুলোকে বিচ্ছিন্ন ও অবরুদ্ধ করে ফেলে তালেবান। 

আকাশপথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বীতাহীন বিমান শক্তি আর আফগান সামরিক বাহিনীর তিন লাখ সদস্যের শক্তিও এ জয়যাত্রা রুখতে পারেনি। অবশ্য, মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, কাবুল পতনের আগের শেষ দিনগুলোতে প্রকৃত আফগান সেনা সংখ্যা ছিল কাগজেকলমে প্রদর্শিত সংখ্যার মাত্র ছয় ভাগের এক ভাগ। 

লস্কর গাহ শহরে তালেবান অবস্থান লক্ষ্য করে মেশিনগান দিয়ে গুলি করছে এক আফগান সেনা। ছবি: জিম হিউলেব্রোয়েক/ দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস
মার্কিন মেরিন সেনাদের দৃষ্টি আকর্ষণে ভ্রমণের নথিপত্র দেখাচ্ছেন দেশত্যাগে ইচ্ছুক আফগানরা। ছবি: জিম হিউলেব্রোয়েক/ দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস

বেশিরভাগ আফগান সেনারা যুদ্ধ করার চাইতে পালিয়ে যাওয়াই শ্রেয় মনে করে। শত্রুর দিকে বুক বাড়িয়ে লড়তে লড়তে যারা মারা গেছে, তারা এমন ব্যবস্থায় আস্থা রেখেছিল যার ওপর খোদ তাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিশ্বাস ছিল না। 

ট্রাম্পের ঘোষণা আর বাইডেনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অনেক আগে সেই ২০০৯ সাল থেকেই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়। ওই সময়ের মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রথমে সেনা সংখ্যা বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি করেন এবং তারপর ২০১৪ সালের মধ্যে প্রত্যাহারের সময়সীমা ঘোষণা করেন। 

তারপর থেকে আমেরিকা ও তার আফগান মিত্ররা সতর্কতা, সন্দেহ আর অনুমানের নানা পর্যায় অতিক্রম করেছে, তবে বেশি প্রাধান্য পায় তাদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ও ব্যবসায়ীক স্বার্থ রক্ষার দিকগুলো। অনিশ্চিত এ অবস্থায় আফগান কর্মকর্তা ও রাজনীতিকদের আপাদমস্তক দুর্নীতির গতি সংক্রামক আকার ধারণ করে। এনিয়ে পশ্চিমা মিত্রদের সমালোচনা গ্রাহ্য না করার পরও তাদেরই পেছনে শত শত কোটি ডলার খরচ অব্যাহত রাখা হয়। পশ্চিমা দুনিয়া আশা করেছিল, আফগান সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার এই চেষ্টা করে পরিস্থিতিতে হয়তো কোন পরিবর্তন আসবে। কিন্তু, তা কোনকালেই হবার ছিল না এবং হয়ওনি।  

বছরের পর বছর পশ্চিমা করদাতাদের অর্থ আত্মসাৎ করা আফগান রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী অভিজাত সম্প্রদায় কাবুলের পতন অত্যাসন্ন বোঝা মাত্র পালিয়েছে। রয়ে যায় শুধু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করা সাধারণ আফগানরা। শেষ মার্কিন বিমানটির উড়াল দেওয়ার পরও এমন অন্তত এক লাখ আফগান পেছনে রয়ে গেছে। তারা মার্কিন সরকারের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় ও কাজের সুযোগ পাওয়ার আশা করেছিলেন। 

গত জুলাই থেকে সেনা প্রত্যাহার যখন শুরু হয়, তখন পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া সুশৃঙ্খলভাবেই সম্পন্ন হতে থাকলেও, ১৫ আগস্ট কাবুল পতনের পর থেকে মহাপ্রলয়ের মতো বিশৃঙ্খল দশা তৈরি হয় কারজাই বিমানবন্দরের প্রবেশ পথগুলোয় লাখো আফগানের সমবেত ভিড়ে। মার্কিন সেনারা হতবাক হয়ে দেখে, ট্যাঙ্ক বা বোমায় সজ্জিত শত্রু নয় বরং দলে দলে সাধারণ জনতা তাদের নিরাপত্তা ব্যূহ ভেদ করে পরিত্রাণের আশায় এগিয়ে আসছে।  

সামরিক বিমানের গায়ে ঝুলে থাকা আফগানদের আকাশ থেকে পতনে মর্মান্তিক মৃত্যুর পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এরপর যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একযোগে কাজ করতে রাজী হয় তালেবান। উভয়পক্ষ নতুন করে নিরাপত্তা বেষ্টণী রক্ষায় তৎপর হয়। অপরদিকে, বিশ্বের অন্যতম বড় কূটনৈতিক মিশন কাবুলের মার্কিন দূতাবাস থেকে হেলিকপ্টারে করে কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়া শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। 

কূটনীতিক উদ্ধারের সেই প্রচেষ্টা বিশ্ববাসীকে আমেরিকার আরেকটি হেরে যাওয়া যুদ্ধ- ভিয়েতনাম ও সায়গন নগরীর পতনের কথাও মনে করিয়ে দেয়। 

কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ল্যান্ড করছে মার্কিন বিমানবাহিনীর একটি সি-১৭ পরিবহন বিমান। ছবি: জিম হিউলেব্রোয়েক/ দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস
গত সোমবার কাবুলে একসঙ্গে ছবি তোলার পোজ দিচ্ছে তালেবানের নতুন প্রজন্মের যোদ্ধারা। ছবি: জিম হিউলেব্রোয়েক/ দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস

চলতি মাসে পাসপোর্ট ও অন্যান্য কাগজপত্র হাতে অপেক্ষমাণ জনসমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক মার্কিন সেনাসদস্য বলেছিলেন, "তালেবানের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক লাভের একটি সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।" মধ্য রাত্রির অন্ধকারে রাইফেলে লাগানো টর্চ জ্বেলে ওই সৈনিকের সহকর্মীরা কাঁটাতারের বেড়া ডিঙ্গিয়ে বিমানবন্দরে ঢুকতে চাওয়া মানুষকে দূরে থাকার আদেশ দিচ্ছিলেন। 

এক বছর, দশ বছর বা এমনকি ১৫ বছর আগেও তালেবান ছিল গাছ ও পাথরের আড়ালে আত্মগোপনকারী একদল গেরিলা যোদ্ধা। কিন্তু, এই আপাত অদৃশ্য যোদ্ধারাই আফগান ভূমিতে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো ও তার আফগান মিত্রদের চোখের সামনে পাশার দান পাল্টে দিয়েছে। সমস্ত দেশকে তারা পরিণত করেছিল দখলদার বাহিনীর জন্য স্থল-মাইন সজ্জিত জাহান্নামে। সামনে থাকা সহকর্মীর দেহখানি হঠাৎ বিস্ফোরণে ছিন্ন হলে কী করণীয়; প্রতিটি পদক্ষেপ নেওয়ার আগে বিদেশি সৈনিক ও তাদের আফগান মিত্রদের তা ভাবতে হয়েছে। 

অথচ, যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের অন্তিম মুহূর্তে অদৃশ্য সেই তালেবান রক্ত-মাংসের গড়ন নিয়ে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। পুরো দেশটির যেকোনো সড়ক বা প্রবেশপথেই চোখে পড়বে তাদের উপস্থিতি। সাবেক মার্কিন ঘাঁটিগুলোয় উড়ছে তাদের সফেদ ঝান্ডা। কাবুল বিমানবন্দরেও তারাই জনতার ভিড় সামলেছে, যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়েছে যুদ্ধ শেষ করার সুযোগ। আর এ সবকিছুই তারা করেছে নিজ মর্জিতে, যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত মেনে নয়।  


  • সূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস 
     

Related Topics

টপ নিউজ

আফগানিস্তান / মার্কিন সেনা প্রত্যাহার / অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ / তালেবান

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ইতিহাসে এ প্রথম: ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মামলার শুনানি কাল সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বিটিভিতে
  • পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে নিজেদের যুদ্ধবিমান হারানোর বিষয় স্বীকার করল ভারত
  • কিটামিন নেওয়ার অভিযোগ মাস্কের বিরুদ্ধে; মানব মস্তিষ্কে এর প্রভাব কী?
  • করমুক্ত আয়সীমার সঙ্গে বাড়তে পারে করের হারও
  • যে বাজারে পা ফেলার জায়গা থাকে না, কিচিরমিচিরে কান পাতা দায়
  • ‘সংস্কারের কলা দেখাচ্ছেন’: ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার আলোচনা প্রসঙ্গে বিএনপির সালাহউদ্দিন

Related News

  • চীনের উদ্যোগে ‘সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে’ এগোচ্ছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান
  • জুয়ার আশঙ্কা থেকে দাবা খেলা নিষিদ্ধ করল তালেবান
  • ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা: যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধার মুখে পড়বেন আফগান ও পাকিস্তানিরা
  • প্রতিবেশির কারণে রক্ষা: আফগানিস্তানকে ধন্যবাদ, বাংলাদেশ কখনোই তলানিতে পৌঁছায় না
  • বিক্রির জন্য পান্না: তালেবানরা অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে মাটির নিচে নজর দিচ্ছে

Most Read

1
বাংলাদেশ

ইতিহাসে এ প্রথম: ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মামলার শুনানি কাল সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বিটিভিতে

2
আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে নিজেদের যুদ্ধবিমান হারানোর বিষয় স্বীকার করল ভারত

3
আন্তর্জাতিক

কিটামিন নেওয়ার অভিযোগ মাস্কের বিরুদ্ধে; মানব মস্তিষ্কে এর প্রভাব কী?

4
অর্থনীতি

করমুক্ত আয়সীমার সঙ্গে বাড়তে পারে করের হারও

5
ফিচার

যে বাজারে পা ফেলার জায়গা থাকে না, কিচিরমিচিরে কান পাতা দায়

6
বাংলাদেশ

‘সংস্কারের কলা দেখাচ্ছেন’: ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার আলোচনা প্রসঙ্গে বিএনপির সালাহউদ্দিন

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab