জাদুমাখা গোলে ম্যারাডোনার পাশে মেসি

সৌদি আরবের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু করার পর দলের অবস্থা জানাতে গিয়ে লিওনেল মেসি বলেছিলেন, 'আমরা এখন মৃত প্রায়।' ধাক্কাটা কেমন ছিল, তা বলাই বাহুল্য। এক ম্যাচেই শেষ ষোলোর পথ কঠিন হয়ে ওঠে আলবিসেলেস্তেদের। মেক্সিকোর বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচটি ছিল আর্জেন্টিনার বাঁচা-মরার লড়াই। চাপের পাহাড় মাথায় নিয়ে মাঠে নামতে হয়েছিল আর্জেন্টিনাকে।
এমন ম্যাচে জাদুকর হয়ে দেখা দিলেন মেসি। গোল করে দলকে বাঁচালেন খাদের কিনার থেকে, নিজের নামটি বসিয়ে নিলেন কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনার নামের পাশে। মেক্সিকোর বিপক্ষে খেলতে নেমেই ম্যারাডোনার একটি রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেন মেসি, পরে গোল করে আরেকটি রেকর্ডে ভাগ বসান আর্জেন্টিনার প্রাণভোমরা।
এতোদিন আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড ছিল ম্যারাডোনার। চারটি বিশ্বকাপে ২১টি ম্যাচ খেলেন আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর। মেক্সিকোর বিপক্ষে বিশ্বকাপের ২১তম ম্যাচটি খেললেন মেসি। পরের ম্যাচেই ম্যারাডোনাকে ছাড়িয়ে যাবেন তিনি।
প্রায় একক দক্ষতায় ১৯৮৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে চ্যাম্পিয়ন করা এবং পরের বিশ্বকাপে ফাইনালে তোলা ম্যারাডোনা বিশ্বকাপে ২১ ম্যাচে ৮ গোল করেন। যোগ্য উত্তরসূরী মেসিও ২১তম ম্যাচেই বিশ্বকাপের অষ্টম গোল করলেন। একই দিনে ম্যারাডোনার দুটি কীর্তিতে ভাগ বসালেন রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী। এই দুজনের চেয়ে বেশি গোল আছে কেবল বাতিস্তুতার, তার গোল ১০টি।
একটা সময় পর্যন্ত মেসির ঘাড়ে অপবাদ ছিল তিনি যতোটা বার্সেলোনা, ততোটা আর্জেন্টিনার নন। সেই অবদান ঘুচিয়ে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক হয়ে উঠেছেন দলের প্রাণ। এ নিয়ে আর্জেন্টিনার সর্বশেষ ছয় ম্যাচেই গোল করলেন মেসি। এর আগে ২০১১ সালের নভেম্বর থেকে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা ছয় ম্যাচে গোল করেন তিনি।
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপের গোলেও অবদান রাখায় মেসি অনবদ্য। দেশটির পাওয়া সর্বশেষ ১৫ গোলের মধ্যে ১০টিতেই মেসির অবদান আছে। এর মধ্যে নিজে করেছেন ৭ গোল, বাকি ৩টি করিয়েছেন সতীর্থদের দিয়ে। মেক্সিকোর বিপক্ষে চোখ জুড়ানো গোল করা মেসি ছিলেন দ্বিতীয় গোলের যোগানে। তার পাস থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সে থেকে ডান পায়ের শটে বল জালে জড়ান এনসো ফার্নান্দেস।