করোনা আক্রান্তের ভয়ে স্ত্রীকে গুলি, তারপর আত্মহত্যা

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় রাজ্যে গুলি করে স্ত্রীকে হত্যা করার পর আত্মহত্যা করেছেন এক ব্যক্তি। তারা দুজনেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এমন সন্দেহে আতঙ্কিত হয়ে এই মর্মান্তিক কান্ড ঘটিয়েছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই খবর জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার ইলিনয়ের লকপোর্ট টাউনশিপে বাড়িতে প্যাট্রিক জেসেরনিক (৫৫) ও চেরিল শ্রিফার (৫৯) এর মরদেহ আবিষ্কার করে রাজ্যটির পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
দুজনের মরদেহ দুই রুমে ছিল, বন্দুকটি পড়ে ছিল স্বামী জেসেরনিকের মরদেহের পাশে।
মৃত্যুর দুইদিন আগে তারা দুজনেই করোনা শনাক্তের পরীক্ষা করিয়েছিলেন, কিন্তু পরে ফলাফলে তাদের কারো শরীরেই করোনার উপস্থিতি পাওয়া যায় নি।
কিন্তু তবু কেন এমনটা করতে গেলেন এই ইলিনয় দম্পতি?
তাদের পরিবারের সদস্যরা জানান, কয়েকদিন ধরেই শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন শ্রিফার। তারা দুজনেই ভয়ে ছিলেন ব্যাপারটা নিয়ে।
এরপর কয়েকদিন ধরেই ছেলে জেরেনিসকের খোঁজ পাচ্ছিলেন না বাবা-মা। সব লকডাউন, তাই আসতেও পারছিলেন না। তারপর পরিচিত একজনকে তারা বলেন জেসেরনিক ও শ্রিফার দম্পতির বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিতে।
তখনই দেখা গেল এই কান্ড। খোঁজ নিতে আসা লোকটিই পুলিশে খবর দেন।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন বলছে, নিজের মাথায় গুলি করার আগে স্ত্রী শ্রিফারকে পেছন থেকে গুলি করেন জেসেরনিক। দুজনের শরীরে ধস্তাধস্তির কোন চিহ্ন ছিল না।
উইল কাউন্টি শেরিফ অফিস থেকে এক বিবৃতিতে এইসব তথ্য জানানো হয়।
শেরিফ জানান, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ঘরোয়া বিবাদ অনেক বেড়ে গেছে। আবাসিক এলাকাগুলো থেকে এ ধরনের ফোনকল আসার সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু জেসেরনিক ও শ্রিফার দম্পতির বাড়ি থেকে এধরনের কোন অভিযোগ কখনো আসেনি।
ইলিনয় রাজ্যে এপর্যন্ত ১২ হাজার ২৬২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে, মারা গেছে ৩০৮ জন। লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে পুরো দেশ। ফলে গৃহস্থালি নির্যাতন বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় গৃহস্থালী সহিংসতা সংক্রান্ত বিভাগ।
তারা জানায়, "নির্যাতনের বিষয়টা শক্তি আর নিয়ন্ত্রণ খাটাতে ব্যবহার করে অত্যাচারী সঙ্গীটি। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাড়িতে অত্যাচারী সঙ্গীর সঙ্গে রাত-দিন থাকতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অনেক বেশি।"
বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সহিংসতা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন গৃহস্থালি নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরা ও এই বিষয়টি নিয়ে কর্মরত সংস্থাগুলো। যুক্তরাজ্যে, দেশটির লকডাউনে যাওয়ার পর থেকে 'ন্যাশনাল ডোমেস্টিক অ্যাবিউজ হেল্পলাইন' এ ফোনকল এবং অনলাইনে সাহায্যের অনুরোধ ২৫% পর্যন্ত বেড়ে গেছে।