সেন্টমার্টিনে নতুন ‘সংরক্ষিত এলাকা’ ঘোষণা করল সরকার

জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষায় বাংলাদেশের একমাত্র সামুদ্রিক প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গ কিলোমিটার (৬৭২ বর্গ মাইল) এলাকাকে 'মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া' (এমপিএ) বা নতুন সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।
বাংলাদেশের 'এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন'-এর মোটামুটি দেড় শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। সেইসঙ্গে, প্রায় ২৩০ প্রজাতির ফিনফিশের প্রধান আবাসস্থল গ্রীষ্মমন্ডলীয় এই দ্বীপের চারপাশ জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। বিশ্বব্যাপী হুমকির সম্মুখীন বন্য ও সামুদ্রিকপ্রাণী যেমন ইন্দো-প্যাসিফিক হাম্পব্যাক ডলফিন, তিমি হাঙর, সাদা দাগযুক্ত হুইপ্রে, জলপাই রঙের ছোট কচ্ছপ এবং সবুজ রঙের বড় মাথাযুক্ত কচ্ছপকেও রক্ষা করবে নতুন এই সুরক্ষিত এলাকা।
'নারকেল জিনজিরা' খ্যাত সেন্টমার্টিন দ্বীপটি দেশের পর্যটন খাতেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই দ্বীপের প্রায় ৭ হাজার বাসিন্দা কেবল পর্যটন এবং মাছ ধরার আয়ের ওপরই নির্ভরশীল। তবে, পর্যটনদের অবাধ যাতায়াত দীর্ঘদিন ধরেই দ্বীপটির ওপর ফেলে আসছে নেতিবাচক প্রভাব। সরকারিভাবে এসব প্রভাব প্রশমিত করার যথেষ্ট প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও অনিয়ন্ত্রিত বর্জ্য, নানান ধরনের দূষণ, এবং অতিরিক্ত প্রবাল ও মাছ শিকার সামুদ্রের জীববৈচিত্র্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, "সেন্টমার্টিন দ্বীপের সরক্ষিত এলাকার সঙ্গে বিদ্যমান সোয়াচ-অফ-নো-গ্রাউন্ড এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ঘোষিত আরও দুটি সামুদ্রিক সংরক্ষণাগার আমাদের সামুদ্রিক এলাকার জীববৈচিত্র্য সরক্ষণে সহায়তা করবে। এর মাধ্যমে আমরা দেশের সমুদ্র এলাকার ১০ শতাংশ রক্ষা সংক্রান্ত জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অধীনে আমাদের জাতীয় লক্ষ্য অর্জনের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলাম।"

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নতুন সুরক্ষিত এলাকা বা এমপিএ-তে বিভিন্ন ধরনের নিয়মনীতি প্রস্তাবিত করা হয়েছে। এর মধ্যে মাছ ধরা ও নৌযান চলাচল নিয়ন্ত্রণে আলাদা জোন স্থাপনের কথাও বলা হয়েছে।
প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমির হোসেন চৌধুরী বলেন, "এমপিএ প্রবিধানগুলোর সঙ্গে সম্মতি কার্যকর ও পর্যবেক্ষণ করার জন্য বন বিভাগ একটি সমন্বিত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরি করবে। সেখানে স্থানীয় জেলেসহ সকল অংশীদাররা জড়িত থাকবেন।"
"আমরা এই এমপিএ'র সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য মৎস্য বিভাগ, উপকূলরক্ষী, নৌবাহিনী এবং স্থানীয় মাছ ধরা সম্প্রদায়ের সঙ্গে যৌথ টহল পরিচালানার পরিকল্পনা করছি", তিনি আরও বলেন।
এছাড়া, জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় সেন্টমার্টিনের এমপিএ-তে সরকার ও স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটি বাংলাদেশ।
- সূত্র: ডব্লিউসিএস ওয়েবসাইট