ইরানে মার্কিন হামলার পর রাশিয়াকে আরো সক্রিয় হতে হবে: খামেনি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের হামলার পর সোমবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে মস্কো পাঠান।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েল এরই মধ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যার সম্ভাবনা এবং সরকার পরিবর্তনের ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন। রাশিয়া আশঙ্কা করছে, এ ধরনের পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা আরও বাড়াবে।
এক শীর্ষস্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি একটি চিঠি নিয়ে মস্কো গেছেন। চিঠিটি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির পক্ষ থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে ইরান রাশিয়ার কাছ থেকে আরও জোরালো সহযোগিতা চেয়েছে।
পুতিন ইসরায়েলি হামলার নিন্দা করলেও, যুক্তরাষ্ট্রের হামলা চালানোর বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেননি। তবে গত সপ্তাহে তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং পরমাণু ইস্যুতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
রয়টার্সকে ইরানের কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত রাশিয়ার সহায়তায় তেমন সন্তুষ্ট নয় তেহরান। দেশটি চায়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পুতিন আরও শক্ত অবস্থান নিক। তবে তেহরান কী ধরনের সহায়তা চাচ্ছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেনি সূত্রগুলো।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, পুতিন আরাগচিকে গ্রহণ করবেন, তবে কী আলোচনা হবে তা জানায়নি।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসকে আরাগচি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে ইরান ও রাশিয়া নিজেদের অবস্থান সমন্বয় করছে।
পুতিন আগেও ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, উত্তেজনা কমাতে মস্কোর কিছু প্রস্তাব তারা উভয় পক্ষকেই দিয়েছে এবং এতে করে ইরান যেন শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারে, সেটাও নিশ্চিত করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে পুতিন স্পষ্ট জানান, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যা করতে পারে—এমন সম্ভাবনা নিয়ে তিনি আলোচনা করতে চান না।
পুতিন বলেন, ইসরায়েল মস্কোকে আশ্বস্ত করেছে যে, ইরানের বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে নতুন দুটি চুল্লি নির্মাণে নিয়োজিত রুশ বিশেষজ্ঞদের ক্ষতি করবে না তারা।
রাশিয়া বহুদিন ধরেই তেহরানের মিত্র এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভেটোক্ষমতাসম্পন্ন সদস্য হিসেবে ইরানের পরমাণু আলোচনা ও চুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে ওই চুক্তি বাতিল করেন।
এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধে চতুর্থ বছরের মতো জড়িয়ে থাকা পুতিন এখনো প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরান নিয়ে সরাসরি সংঘাতে যেতে আগ্রহ দেখাননি। এমন সময় ট্রাম্প আবারও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের চেষ্টা করছেন।
অনুবাদ : নাফিসা ইসলাম মেঘা