রোববারের বৈঠকের পর যেকোনো দিন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা: ইসি আনোয়ারুল
জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা নিয়ে আগামী ৭ ডিসেম্বর (রোববার) সভায় বসতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই সভার পরই যেকোনো দিন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এবার সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
ইসি আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, 'নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। তফসিল ঘোষণার দিন-তারিখও পরবর্তী কমিশন সভায় আমরা বসে সুনির্দিষ্টভাবে সিদ্ধান্ত নেব।'
তফসিল ঘোষণার সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে এই কমিশনার বলেন, 'তফসিল ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের কথা তো আমরা বলে আসছি। সেক্ষেত্রে ৮ ডিসেম্বর থেকে যেকোনো দিন হবে। আর ভোটের তারিখও ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে—এমন সময়। তফসিল থেকে দু'মাস হিসাব করলে সুনির্দিষ্ট তারিখ পাওয়া যাবে।'
ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আসন্ন রমজানের আগে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হবে। সরকারের তরফ থেকেও একই সময়ে ভোট হওয়ার কথা বলা হচ্ছে। ৭ ডিসেম্বরের কমিশন সভায় তারিখগুলো পর্যালোচনা করে কিছু আনুষ্ঠানিকতা সেরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নির্ধারিত দিনে জাতির উদ্দেশে ভাষণে দুই ভোটের (সংসদ ও গণভোট) সময় জানাবেন।
ভোটের সময় ও গোপন কক্ষ বাড়ানোর পরিকল্পনা
ইসি সূত্রে জানা গেছে, এবার প্রায় ৪৩ হাজার ভোটকেন্দ্রে ২ লাখ ৪৪ হাজার ভোটকক্ষ (পোলিং বুথ) বিবেচনা করা হয়েছে। সংসদের ভোটের দিনই গণভোট হবে এবং ভোটাররা দুটি আলাদা ব্যালটে ভোট দেবেন।
এ বিষয়ে ইসি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গণভোট ও সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত ২৯ নভেম্বর রাজধানীতে 'মক ভোটিং' বা মহড়া ভোটের আয়োজন করা হয়। সেই অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, সংসদ ও গণভোট একসঙ্গে নিতে সময় তুলনামূলক বেশি লাগছে।
তাই ভোটগ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতি ভোটকক্ষে একটির পরিবর্তে গোপন কক্ষ (যেখানে সিল দিয়ে ভোট দেওয়া হয়) বাড়ানোর চিন্তাও রয়েছে কমিশনের।
তফসিল ও ৬০ দিনের হিসাব
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, ভোটের ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করার কথা ছিল। তবে এ বিষয়ে গত সপ্তাহে এক প্রশ্নের জবাবে ইসি আব্দুর রহমান মাসুদ টিবিএসকে বলেন, '৬০ দিন বাধ্যতামূলক নয়। এটি ৫৮ কিংবা ৬২ দিনও হতে পারে। মোটামুটি ৬০ দিনের কাছাকাছি হিসাব ধরা হয়েছে।'
দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণের মধ্যে আলোচনা চলছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুসারে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার প্রয়োজনে কমিশন ইতোমধ্যে নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শেষ করেছে।
উল্লেখ্য, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়েই মূলত আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হয়। তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া, যাচাই-বাছাই, প্রার্থিতা প্রত্যাহার এবং প্রতীক বরাদ্দের সুযোগ পান। তফসিলের মাধ্যমেই নির্বাচনের চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারিত হয়।
