পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের অংশ হওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি কিংবা তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের কেউই আগামী জাতীয় নির্বাচনের পর গঠিত নির্বাচিত সরকারের হতে চান না। আজ বুধবার (১১ জুন) ব্রিটিশ থিঙ্ক ট্যাঙ্ক চ্যাথাম হাউসে বক্তব্য প্রদানকালে একথা জানান তিনি।
এবিষয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করলে তিনি জোর দিয়ে বলেন, "না, কখনোই না। আমি মনে করি না যে আমাদের উপদেষ্টা পরিষদের কেউ এমন আগ্রহ পোষণ করেন।" তিনি স্পষ্ট করে দেন যে, তাদের একমাত্র কাজ হচ্ছে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা।
নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে ইউনুস বলেন, "আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে নির্বাচনটি সঠিকভাবে হচ্ছে। এটিই আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।"
আওয়ামী লীগ সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে ইউনুস বলেন, যদি একটি সংগঠন হত্যা, গুম এবং রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়, তবে সেটিকে রাজনৈতিক দল বলা যায় কি না, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, "এটা কোনও চূড়ান্ত রায় নয়, বরং একটি বিতর্কের বিষয়।"
তাঁর মতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পর মনে হয়েছিল এই অধ্যায় শেষ—কিন্তু যারা দেশত্যাগ করেছিল, তারা এখনো দুঃখপ্রকাশ করেনি বরং জনগণকে উস্কানি দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, "জাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে—দেশ ও রাজনীতির নিরাপত্তার স্বার্থে বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগপর্যন্ত— আওয়ামী লীগের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখতে হবে।"
আলোচনাকালে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা দাবি করেন, "গণমাধ্যম এত স্বাধীনতা আগে কখনো পায়নি।"

তবে আরেক সাংবাদিক বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ভাঙচুর, সেক্ষেত্রে প্রশাসনের নীরবতা, এবং নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তি বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্যের প্রশ্ন তুললে— ইউনূস স্বীকার করেন, যে সবকিছু সঠিকভাবে সামলানো সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, "এটা এমন এক ধরনের সময়কাল, যার মধ্য দিয়ে আমরা গিয়েছি। সবকিছুই একসাথে এসেছে। জাতীয় শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করাই ছিল আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।"
বক্তব্য শেষে ইউনুসের সম্মানে চ্যাথাম হাউস একটি সংবর্ধনার আয়োজন করেছে, যেখানে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রনীতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা অংশ নেবেন।