বান্দরবান-সুয়ালক-লামা সড়কে যান চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে স্থানীয়রা

কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টির কারণে বান্দরবান-সুয়ালক-লামা বাইপাস সড়কে শুক্রবার (৩০ মে) থেকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বান্দরবান সদর উপজেলার টংকাবতী ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়া এলাকায় সড়কের তিনটি স্থানে বড় ভাঙনের কারণে সড়কটি সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দুই বছর আগে কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি কার্পেটিং করা হলেও এর পর থেকে আর কোনও সংস্কার হয়নি। ফলে বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে বারবার ধসে পড়ছে সড়কের বিভিন্ন অংশ।
বর্তমানে সড়কটি যেন একটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করছে। তবে এবার পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে যান চলাচল এখন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ।
টংকাবতী ইউনিয়নের পূর্ণবাসন ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দা হেবল ত্রিপুরা জানান, দুই বছর আগে কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি পাকা করা হলেও এখন তা বেহাল অবস্থায় রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
একই অভিযোগ জানান স্থানীয় বাসিন্দা তঙ্গয়ে ম্রো ও ট্রাকচালক জসিম। তারা জানান, বৃষ্টি হলেই সড়কের মাটি ধসে পড়ে। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে অতি বৃষ্টির কারণে সড়কের দু'পাশ ধসে পড়ায় শুক্রবার থেকে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে।
টংকাবতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মায়াং ম্রো প্রদীপ বলেন, গত বছর থেকেই সড়কটি ধসে পড়ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-কে জানালেও কোনও লাভ হয়নি।
এবার বর্ষার শুরুতেই যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে যান চলাচলের ব্যবস্থা নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

এ বিষয়ে এলজিইডি-এর সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ সরোয়ার হোসেন বলেন, সুয়ালক-লামা সড়কের টংকাবতী ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়ার সড়কের তিনটি জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলীকে সরেজমিনে পরিদর্শন করে বাজেট প্রনয়ন করার জন্য বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'দু-এক দিনের মধ্যে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রধান কার্যালয়ে আবেদন করা হবে। বড় ধরনের বরাদ্দ পেলে সড়কের দুই পাশে রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণ করা হলে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে।'
পরিস্থিতি মোকাবেলায় ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র
কয়েক দিনের ভারী বর্ষণের কারনে যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলার সাতটি উপজেলায় মোট ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। তাছাড়া পাহাড়ে পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয় চলে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে পৌর কতৃপক্ষ থেকে।
অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর মধ্যে বান্দরবান সদরে ৪৬টি, রুমা উপজেলায় ২৮টি, রোয়াংছড়িতে ১৯টি, থানচিতে ১৫টি, লামায় ৫৫টি, আলীকদমে ১৫টি এবং নাইক্ষ্যংছড়িতে ৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে।
বান্দরবান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মন্ডল জানান, রোববার সকাল থেকে আবারও থেমে থেমে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় বান্দরবানে ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।